রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা এখনো গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে সারজিস আলম গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গুলি চালাল দুর্বৃত্তরা, ছাত্র আন্দোলনের কর্মী আহত গাজীপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা ভাঙ্গুড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু লালমনিরহাটে অস্ত্রসহ যুবদলের দুই নেতা আটক ভাঙ্গুড়ায় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করায় ইন্সট্রাকটরকে মারধোর ঝিকরগাছা গদখালী ফেব্রুয়ারির ৩দিবসে শতকোটি টাকা আয়ের আশা চাষীদের কোনাবাড়ীতে আরও এক ছিনতাই কারী গ্রেফতার প্রতিটি সফল আন্দোলনের পেছনে ছাত্রছাত্রীদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল,এম মঞ্জুরুল করিম রনি বশেমুরকৃবি’তে আনন্দ-উৎফুল্লে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

বাড়তি কালভার্ট তৈরি ও ক্ষতি সারিয়ে অক্টোবরেই উদ্বোধন

রিপোর্টারের নাম : / ৭৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩

সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প এবং দোহাজারী থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেলপথ নির্ধারিত সময় অক্টোবরেই উদ্বোধন করা হবে। আর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ রেল পথটির ডিজাইন স্থানীয় আবহাওয়ার ওপর নির্ভর না করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা না বলে করা হয়েছে। যারাই করুন তারা ভুল করেছেন। কেন এ বৃষ্টিতে তলার মাটি সরে গেল, নকশায় কি ত্রæটি ছিল এটা জানতে একটা জাতীয় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১০২ কিলোমিটার। এ প্রকল্পটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ অবকাঠামো বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। আগামী অক্টোবর মাসে উদ্বোধনের পর রেল চলাচল শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্মাণ শেষ হবার আগেই চলতি মাসের শুরুতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢলে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেললাইনটি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতকানিয়ার তেমুহনী এলাকায় আধা কিলোমিটারজুড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে রেললাইন উঁচু-নিচু হয়ে আছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের এ মেগা প্রকল্প কতটা জলবায়ুর বান্ধব, টেকসই আর পরিকল্পিত হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
রেললাইনটির গলদ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত ভোরের কাগজকে বলেন, এ রেলপথের জন্য পানি আটকে গেছে এটা সত্যি। কিন্তু বৃষ্টিতে রেলের তলার মাটি সরে যাওয়ার জন্য নির্মাতা কনসালটেন্ট দায়ী। তাকে কালোতালিকাভুক্ত উচিত। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্যানেল অব এক্সপার্ট ও কনসালটেন্টকে দ্বায়বন্ধতার আওতায় আনা দরকার। নিশ্চয়ই নকশায় কিছু ত্রæটি ছিল। এটা জানতে জাতীয় কমিটি হওয়া উচিত।
এদিকে গতকাল দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, ব্যাপক পরিমান বৃষ্টি হওয়ায় পানির তোড়ে রেলপথের কিছু অংশের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় রেললাইন বেকে গেছে। রেলপথের এই ক্ষতি মেরামতে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে, যা সংশ্লিষ্ট কন্ট্রাকটর কোম্পানিই করবে। এ অংশের প্রয়োজনীয় স্থানে আরো কালভার্ট করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অক্টোবর মাসেই এ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে। তিনি জানান, আমার পুরো প্রজেক্টের ব্যয়ের তুলনায় ক্ষতি খুব সামান্য। একটা নরমাল মেইনটেনেন্সের জন্য রেলের ১৫ দিন সময় লাগবে।
রেললাইনের এই ক্ষতিকে সামান্য বলে মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। এবারের অভিজ্ঞতা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনটি সংস্কার বা মেরামতের স্থায়ী সমাধানে নজর দেয়ার পরামর্শ তাদের। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, পাহাড়ি ঢল যেভাবে পারে নেমে আসে, এখানে রেললাইন পানি যাবার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। যার ফলে এ অংশটি পানির তোড়ে সরে গেছে। আমাদের ভূপ্রকৃতি তো কীভাবে কি হবে তা আগে থেকে বলা যাবে না। সে মতো আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। এটা কারো বাধার কারণ না হয়ে রেলপথটি খুঁটির উপর করা হতো তাহলে সব সমাধান হয়ে যেত। তিনি বড় বড় প্রকল্পগুলো ভূমি নষ্ট না করে খুঁটির উপর করার দাবি জানান। তাহলে ভবিষ্যতের ক্লাইমেট চেঞ্জের প্রতিরোধ প্রক্রিয়া বজায় থাকবে। একটা দেশের কৌশল কি হওয়া উচিত সেজন্য যোগ্য পরিকল্পণাবিদদের দিয়ে ডিজাইন করার দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, যে কোনো প্রকল্প হাতে নেয়ার আগে পরিবেশগত প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে। কনসালটেন্টদের দেয়া প্লানের মধ্য থেকে সবচেয়ে উপযুক্ত প্ল্যানটি নিয়ে কাজ করার জন্য সরকারের নিজস্ব দক্ষ পরিকল্পনাবিদদের কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণে এ রেলপথের তলার মাটি সরে গেছে, যেটি সারাতে খুব বেশি সময় লাগবে না, দেড় কোটি টাকার মতো এ ক্ষতি সারাতে লাগবে।
কালভার্টের সংখ্যা কমানো হয়নি বরং বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, কক্সবাজার রেললাইনের একশ কিলোমিটারে ১৭৩টি কালভার্ট, ৩৮টি ব্রিজ তৈরি হয়েছে। একশ কিলোমিটার রেললাইনে সাড়ে ৪ কিলোমিটার জায়গা পানি নিষ্কাশনের জন্য ওপেন রাখা হয়েছে। রেললাইনের ক্ষতির কারণ হিসেবে রেকর্ড বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলকেই দায়ী করে তিনি বলেন, দুই দিনে আটশ মিলিমিটার বৃষ্টি আগে কখনো হয়নি। এখন যদি আমাদের ক্লাইমেটের অদ্ভুত আচরণের জন্য হয়, এই জিনিসগুলোতো আমাদের আগে জানা ছিল না। তবে প্রয়োজনীয় স্থানে আরো কালভার্ট করা হবে বলে জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর