শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

রেডিয়েশন প্রয়োগে ঘরেই সংরক্ষণ করা যাবে পেঁয়াজ

রিপোর্টারের নাম : / ৩৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ১ মে, ২০২৪

পেঁয়াজ সংরক্ষণে গবেষণায় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে, গামা রশ্মি (রেডিয়েশন) প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষকের ঘরে দীর্ঘমেয়াদে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা সম্ভব। এই মাধ্যমে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস, পচন, স্পাউটিং কমিয়ে আনা সম্ভব। এই পদ্ধতিটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরাও পদ্ধতিটি প্রয়োগে সফলতা পেয়েছেন।

কয়েক বছর ধরে বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ পেঁয়াজ, রসুন, আলু, আম, কলা, পটোল, করলাসহ অন্যান্য পচনশীল ফসল সংরক্ষণে গামা রশ্মি প্রয়োগের পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছে। এর ধারাবাহিকতায় এবার পেঁয়াজ নিয়ে পরীক্ষায় সফলতা এসেছে।

গবেষকরা বলছেন, রেডিয়েশন প্রয়োগ করে প্রায় ৭-৯ মাস পর্যন্ত কৃষক নিজ ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন। এতে বাংলাদেশে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমবে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধ ও পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।

গবেষক দলে ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার।

গবেষকরা জানান, বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ ২০২০ সাল থেকে পোস্ট হারভেস্ট গবেষণাগারে বিভিন্ন ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালাচ্ছে। বিভিন্ন ফসল সংরক্ষণের জন্য গামা রেডিয়েশন ডোজ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ১০০ গ্রাম ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের গাছ গজানো বন্ধ হয়েছে। এতে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস ও পচন কম হচ্ছে। এর মাধ্যমে পেঁয়াজের গুণগত মান বজায় রেখে ঘরের তাপমাত্রায় ৭-৮ মাস সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। সাধারণ পদ্ধতিতে রেডিয়েশন প্রয়োগ ছাড়া পেঁয়াজকে জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত মাচায় সংরক্ষণ করা হয়।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার জানান, গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের দুটি জাত ‘তাহেরপুরী’ ও ‘লালতীর কিং’-এ গাছ গজানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়েছে। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পেঁয়াজ চাষি আনন্দ সাহা জানান, এই প্রযুক্তিতে কৃষক খুবই আশাবাদী। প্রতিবছর হাজার হাজার টাকার পেঁয়াজ পচে যায়। তা থেকে রেহাই মিলবে, লোকসানও হবে না।

বিনা উপকেন্দ্র রংপুরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলী জানান, পেঁয়াজ চাষি এ প্রযুক্তি পাওয়ার জন্য উদগ্রীব।

বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম জানান, কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বাণিজ্যিকভাবে রেডিয়েশন প্রয়োগ করার জন্য বিশ্বব্যাংকের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিনা আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র ও গাজীপুরে গামা সেন্টার স্থাপন করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর