রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুতে ইতিবাচক মিয়ানমার

রিপোর্টারের নাম : / ৩৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় রিট্রিট সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চীন সফর শেষে বুধবার রাতে বেইজিং থেকে সরাসরি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। পরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সম্মেলনে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দুই দিনব্যাপী এই রিট্রিটে বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিমসটেক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করা এবং আসন্ন ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনকে সফল ও ফলপ্রসূ করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এতে নেপালের প্রতিনিধিত্ব করছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব।

আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আঞ্চলিক এই জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও জ¦ালানি নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, সংযোগ এবং সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে কার্যকর সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

ভারত ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ : রিট্রিটে যোগদানের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভারত ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে নিত্যপণ্য আমদানিতে অব্যাহত সুবিধা বজায় রাখা ও তিস্তা প্রকল্পের জন্য কারিগরি দল পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। অন্যদিকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুই বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেন। এ ছাড়া নেপালের পররাষ্ট্র সচিব সেওয়া লামসাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বিকেলে এসব কথা বলা হয়েছে।

রিট্রিটের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে থান সুইয়ের বৈঠক হয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাদের আগের আলোচনাগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মিয়ানমার দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, তারা তাদের দেশ থেকে জোরপূর্বক উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সম্মত আছে। কিন্তু এটি কার্যে পর্যবসিত হওয়ার চিহ্ন এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হলেই কেবল মিয়ানমার তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার নজির রাখতে পারে উল্লেখ করে বিষয়টির ওপর গভীর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুই এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেন এবং তার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর অভিপ্রায় পুনর্ব্যক্ত করেন।

এদিকে রিট্রিটের শেষ দিন গতকাল শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিমসটেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সকালে নয়াদিল্লির কল্যাণ মার্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পঞ্চবটিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নেপালের পররাষ্ট্র সচিব। ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কুশলাদি ও সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় শেষে ফটোসেশনে অংশ নেন।

বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বা ‘বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে বহুপক্ষীয়, কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগ’ সংক্ষেপে বিমসটেক দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি দেশ নিয়ে গঠিত একটি আঞ্চলিক জোট। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড ১৯৯৭ সালে গঠিত এ জোটের সদস্য।

২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বিমসটেকের সদর দপ্তর উদ্বোধন করেন। বিমসটেকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং বঙ্গোপসাগর উপকূলের দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করা। ব্যবসা, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন, মৎস্যসম্পদ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পোশাক ও চামড়াশিল্পসহ আরও অনেকগুলো ক্ষেত্র বিমসটেকের আওতাভুক্ত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর