আজমেরি বাসে নারী যাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আটক-২

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় আজমেরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাসে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে শুক্রবার বিকেলে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকা থেকে পুলিশ বাসের হেলপার ও কন্ট্রাক্টরকে আটক করেছেন।
আটককৃতরা হলো,গাজীপুর মহানগরের এনায়েতপুর গ্রামের মোঃ নাইম মিয়া ছেলে শাহেদ আলী (১৯) ও টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর থানার পাঁচটেকি গ্রামের মোঃ খাইরুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম (১৭)।
এঘটনায় নারী যাত্রী বৃহস্পতিবার রাতেই কোনাবাড়ী মেট্রো থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগের খবর পেয়ে আজমেরি পরিবহনের চালক বাচ্ছু মিয়া ও শাকিল হোসেন নামের দুই বাস চালক আত্নগোপনে রয়েছে বলে আটক হেলপার জানায়।
ওই নারী যাত্রীর স্বজনরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর উত্তরা হাউজ বিল্ডিং বাসষ্টেশন থেকে আজমেরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৯৯২৪) কোনাবাড়ী নিজ বাসায় যাওয়ার জন্য উঠেন।
এসময় আজমেরি বাসটি চালিয়ে আসছিলেন চালক মোঃ বাচ্ছু মিয়া। তার পাশে বসেছিলেন অপর চালক শাকিল হোসেন। আজমেরি পরিবহনের এ বাসটি গাজীপুরের হারিকেন নামক এলাকায় এসে যানজটে পড়েন। এসময় যানজটে আটকা পড়ে কয়েক ঘন্টা কেটে যায়। বাসে থাকা অন্য যাত্রীরা নেমে নিজ গন্তব্যে চলে গেলেও ওই নারী যাত্রী বাসে ঘুমিয়ে পড়ায় বাসেই রয়ে যান।
এসময় ওই যাত্রীবাহি বাসে দুই চালক ও দুই হেলপার আর এক নারী যাত্রী ছিলেন। বাসটি রাত নয়টার দিকে বাইমাইল এলাকায় এসে একটি নির্জন স্থানে থামিয়ে নারী যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন চালক বাচ্ছু মিয়া ও শাকিল।
পরে গাজীপুর বাইবাস এলাকা থেকে হেলপার শাহেদ আলীকে বাসটি চালিয়ে চন্দ্রা যাওয়ার জন্য বললে শাহেদ বাসটি ধীরে ধীরে চন্দ্রার দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। এসময় দুই বাস চালক নারী যাত্রীর শরীরে স্পর্শ করলে নারী যাত্রী চিৎকার করার চেস্টা করলে তার হাতের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ধারণ করে।
রাত নয়টা দিকে বাস চালক বাচ্ছু মিয়া কোনাবাড়ী ফ্লাওভারের পশ্চিম পাশে নামিয়ে দিয়ে বাসটি নিয়ে চন্দ্রা এলাকায় চলে যায়। ওই নারী যাত্রী কোনাবাড়ীর নিজ বাসায় গিয়ে স্বজনদের বিষয়টি জানালে স্বজনরা নারী যাত্রীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই কোনাবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ করেন। এঘটনায় নারী যাত্রীর স্বজনরা চন্দ্রা এলাকায় গিয়ে বাস, হেলপার ও কন্ট্রাক্টরকে
শনাক্ত করে আটক করেন। এসময় স্থানীয় জনতা হেলপারকে গণধোলাই দিয়ে হাত পা বেধে বাসের ভিতর রাখে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক দুই হেলপারকে উদ্ধার করে কোনাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেন।
নারী যাত্রী বলেন, আমি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং বাসষ্টেশন থেকে ওই বাসে উঠে ঘুমিয়ে পড়ি। কখন যে সব যাত্রীরা নেমে গেছে টের পাইনি। বাসের দুই চালকরা আমার শরীরের কাপড় ও গোপন অঙ্গে স্পর্শ করলে টের পাই। এসময় তাদের হাতে পায়ে ধরে অনুয়বিনয় করলেও তারা মানতে নারাজ হয়।
এসময় আমার মোবাইল ফোনটিও নিয়ে আরো ৫ হাজার টাকা দাবি করে। আমি থানায় মামলার ভয় দেখালে তারা আমাকে কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার ব্রীজের পশ্চিমপাশে নামিয়ে দিয়ে চন্দ্রার দিকে চলে যায়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন,
অভিযোগের পরই পরই আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এবিষয়ে ধর্ষণ চেষ্টার মামলার প্রস্ততি চলছে।