রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা এখনো গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে সারজিস আলম গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গুলি চালাল দুর্বৃত্তরা, ছাত্র আন্দোলনের কর্মী আহত গাজীপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা ভাঙ্গুড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু লালমনিরহাটে অস্ত্রসহ যুবদলের দুই নেতা আটক ভাঙ্গুড়ায় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করায় ইন্সট্রাকটরকে মারধোর ঝিকরগাছা গদখালী ফেব্রুয়ারির ৩দিবসে শতকোটি টাকা আয়ের আশা চাষীদের কোনাবাড়ীতে আরও এক ছিনতাই কারী গ্রেফতার প্রতিটি সফল আন্দোলনের পেছনে ছাত্রছাত্রীদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল,এম মঞ্জুরুল করিম রনি বশেমুরকৃবি’তে আনন্দ-উৎফুল্লে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

এক কোটি কিশোরী পাবে জরায়ু ক্যান্সারের টিকা

রিপোর্টারের নাম : / ৭৩ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩

দেশে জরায়ুমুখের ক্যান্সার হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) প্রতিরোধে সরকারের টিকাদান কার্যক্রমের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর অংশ হিসেবে সারা দেশের পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোরীদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর টিকাদান সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে আজ বুধবার। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাজধানীসহ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় এ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শুরুতে ২০ লাখ কিশোরী এ টিকা পাবে। পর্যায়ক্রমে অন্য জেলার প্রায় ১ কোটি কিশোরীকেও এর আওতায় আনা হবে।

জানা গেছে, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন্স (গ্যাভি) থেকে ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা পাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এখন সরকারের হাতে আছে ২৩ লাখ ডোজ। বাকি টিকা ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে আসার কথা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রথম পর্যায়ে ঢাকায়, দ্বিতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রাম ও বরিশালে টিকা দেওয়া হবে। এরপর দেওয়া হবে সারা দেশে। নভেম্বরে আরও ২০ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১২ লাখ টিকা পাওয়া যাবে। আগামী বছর ৪২ লাখ টিকা এবং ২০২৫ সালে ২৩ লাখ টিকা পাওয়া যাবে। এসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গ্যাভির মাধ্যমে আমাদের দেবে।

এদিকে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১৫ বছরের কম বয়সী ৯০ শতাংশ কিশোরীকে এইচপিভি টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে ডব্লিউএইচও। এ ছাড়া ৩৫ ও ৪৫ বছর বয়সী নারীদের দুবার পরীক্ষা করা এবং ৯০ শতাংশকে চিকিৎসার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ডব্লিউএইচওর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শতাধিক দেশে এ টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।

ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোরী বয়সে এইচপিভি টিকা নেওয়া ব্রিটিশ নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার আক্রান্তের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বিবিসি বলছে, ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে এইচপিভি টিকা নেওয়া নারী, যারা বর্তমানে বিশোর্ধ্ব, তাদের জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ৮৭ শতাংশ কম। গবেষকরা জানান, ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সের মধ্যে এ টিকা নিলে ক্যান্সারে আক্রান্তের ঝুঁকি ৬২ শতাংশ কমে যায়। আর ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে নিলে তা নেমে আসে ৩৪ শতাংশে।

চিকিৎসকরা জানান, ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য দায়ী এইচপিভি। বাল্যবিয়ে এ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। রোগটিকে আগেভাগে শনাক্তের জন্য দেশে ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন অব দ্য সারভিকস উইথ অ্যাসেটিক অ্যাসিড বা ভায়া পরীক্ষা চালু থাকলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম।

সরকারি তথ্য বলছে, গত বছর দেশে প্রায় ২৭ হাজার নারী জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৫৮২ জনের।

প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ওজিএসবির সভাপতি ডা. ফারহানা দেওয়ান বলেন, টিকা দিলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুরুতে ১ কোটি কিশোরীকে এ টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারা দেশের ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। টিকাদান সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণও শেষ পর্যায়ে।

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) ব্যবস্থাপক এসএম আবদুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে জরায়ুমুখের ক্যান্সারের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করব। সে লক্ষ্যে রোডম্যাপ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্কুলের কিশোরীদের তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। এ ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত ও শ্রমজীবী কিশোরীরাও এ টিকার আওতায় আসবে।

দেশে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রমের ইতিহাস: দেশে সর্বপ্রথম জরায়ুমুখের ক্যান্সারের টিকা প্রয়োগ শুরু হয় ২০০৮ সালে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এ কর্মসূচি চালাতে বাংলাদেশ সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম নামে একটি কমিটিও করা হয়। ওই সময় ১০ বছরের ৭০ শিশুকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়। পরে গ্যাভির সহযোগিতায় ২০১৬ সালে গাজীপুরে একই বয়সী আরও ৩০ হাজার শিশুকে এ টিকা দেওয়া হয়। এর ছয় মাসের মধ্যে দুই ডোজের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রকল্পটি শেষ হয়।

এরপর ২০১৯ সালে এইচপিভি টিকা ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে ডব্লিউএইচওর কাছে আবেদন করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালের ১২ মার্চ এর অনুমোদন দেয় গ্যাভি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের জুলাইয়ে দেশজুড়ে এ টিকা কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা নেয় সরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর