বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
আব্দুল আলীমের মরদেহ দীর্ঘ আড়াই বছর পর ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন অতীতে ঘরে ঘরে চাকরি দেবার নাম করে হাহাকার দিয়ে গেছে রাজনৈতিক দলগুলো কেন্দ্রীয় জাকের পার্টির নেতা রবিউল ইসলাম রবি ভাঙ্গুড়ায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বেনাপোলে বিজিবি-বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত সলঙ্গায় সেচ্ছাসেবকদলের শীতবস্ত্র বিতরণ গাজীপুরে ৯ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার-১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে আদম ব্যবসায়ী শাহীন ও মশিয়ারের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা সৌদি আরবে অবৈধ অভিবাসী! কুড়িগ্রামে এম আর বি ইকো ব্রিকসকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা শার্শা সরকারি টেকনিকেল স্কুল এন্ড কলেজ ২ দিনব্যাপি বিজ্ঞান মেলা

একাত্তরের জেনোসাইডের স্বীকৃতি দাবি কানাডার আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

রিপোর্টারের নাম : / ১৩৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি নিয়ে কানাডায় হল আন্তর্জাতিক সম্মেলন। বুধবার কানাডার উইনিপেগের হিউম্যান রাইটস মিউজিয়ামে ‘স্মরণ ও স্বীকৃতি: ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের গণহত্যা’ শীর্ষক ওই সম্মেলন হয়।

কানাডায় বাংলাদেশ হাই কমিশন, কানাডার বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (বিসিবিএস), রিফিউজিস রেজিলিয়েন্স সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং রোটারি ক্লাব কানাডা যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিনব্যাপী ওই সম্মেলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা মানব ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধের একটি। এই মাত্রার ও সর্বনাশা এমন নৃশংসতা আর কোথাও ঘটেছে কি-না, আমাদের জানা নাই।”

ভয়াবহ এই জেনোসাইড যে ধরনের স্বীকৃতির দাবি রাখে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

মোমেন বলেন, ভয় ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা দমন করার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে বাংলাদেশের নিরপরাধ সাধারণ জনগণের উপর নির্মম ও ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়েছিল পাকিস্তানের সামরিক জান্তা।

২৫ মার্চকে দেশে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশ্বের সব দেশের কাছ থেকে দিনটিকে আন্তর্জাতিক জেনোসাইড দিবস হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে।”

বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা।

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান; শুরু হয় বাঙালির প্রতিরোধ পর্ব।

নয় মাসের যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং জাতির অসাধারণ ত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সেই বর্বর হত্যাযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। তখন থেকেই এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বছর ১৯৭১ সাল।

”এক দিকে বাংলাদেশ এ বছর স্বাধীনতা অর্জন করেছে, অন্যদিকে এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জঘন্য বর্বরতা, নৃশংসতা, নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের মুখোমুখি হয়েছে জাতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তিন দশকের মধ্যে আরেকটি জেনোসাইড দেখেছে বিশ্ববাসী।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, কোনো জেনোসাইডের বৈশ্বিক স্বীকৃতির জন্য জাতিসংঘ ঘোষিত যেসব শর্ত রয়েছে, তার সবগুলোই পূরণ করে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড।

সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াশিংটন ডিসির জেনোসাইড ওয়াচের অধ্যাপক গ্রেগরি স্ট্যান্টন।

সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের কিন স্টেট কলেজের কোহেন প্রফেসর অব হলোকাস্ট অ্যন্ড জেনোসাইড স্টাডিজ জেমস ওয়ালার, ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবার পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক অ্যাডাম মুলার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, কানাডায় বাংলাদেশের হাই কমিশনার খলীলুর রহমান, বিসিবিএসের প্রধান সমন্বয়ক কাউসার আহমেদ এবং সংগঠনের কানাডীয় পৃষ্ঠপোষক ডেভিড সি নিউম্যান বক্তব্য দেন।

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ড. জন অ্যাডাম বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইডের বিস্তৃতি তুলে ধরে বক্তৃতা করেন অনুষ্ঠানে।

জেনোসাইডের স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে ভবিষ্যতে কানাডায় আরও কিছু কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনার কথা সম্মেলনে জানান হাই কমিশনার খলীলুর রহমান।

কানাডার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটিকে এ বিষয়ে অবহিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে এর মধ্যে।

একাত্তরে গণহত্যার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। জহির রায়হানের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ’স্টপ জেনেসাইড’ দেখানো হয় সম্মেলনে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর