মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ভাঙ্গুড়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইউনিয়ন কৃষকদলের আহব্বায়ককে অব্যাহতি কাজিপুরে আ’লীগের মশাল মিছিল; ফেসবুকে ভাইরাল  কুড়িগ্রামে চরাঞ্চল মানুষের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ‘সুস্বাস্থ্য’ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের যাত্রা শুরু নাটোরে বিএসটিআই’র অভিযানে তিন বেকারি কারখানাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকার নির্বাচনে নতুন নেতৃত্ব সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক,সাধারণ সম্পাদক রনজক রিজভী কাজিপুরে সারে তিন লাখ টাকার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস  কুড়িগ্রামে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ভাঙ্গুড়ায় গ্রামীণ কৃষকের উন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার-২০২৫ অনুষ্ঠিত দুদক কর্মকর্তার দুর্নীতি ধরিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- দুদক চেয়ারম্যান কারামুক্ত হলেন সা’দ পন্থী আলেম মুফতি জিয়া বিন কাশেম

কুড়িগ্রামে চরাঞ্চল মানুষের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ‘সুস্বাস্থ্য’ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের যাত্রা শুরু

রিপোর্টারের নাম : / ২০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলের ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে ‘সুস্বাস্থ্য’ প্রথামিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষগুলো মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এই দুর্গম এলাকাগুলোর নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দক্ষ জনবল ছাড়াই বাড়িতে সন্তান প্রসব করে থাকেন যা শিশু এবং প্রসূতি মায়ের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া সময় মতো চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় নিরাময়যোগ্য রোগগুলোও জটিল আকার ধারণ করে প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘চার্মস’ (চর হেলথ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ফর মাদারস অ্যান্ড সোসাইটি) প্রকল্পের আওতায় ব্র্যাকের উদ্যোগে ২১শে এপ্রিল, সোমবার, কুড়িগ্রামের চর নারায়নপুর এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে ‘সুস্বাস্থ্য’ প্রথামিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।

ফিলিপস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরের ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষকে প্রযুক্তিনির্ভর, গুণগত মানসম্পন্ন এবং সহজপ্রাপ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, ব্র্যাক এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কুড়িগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন নারায়নপুর ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বাস। এখানে চারটি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে, তবে সেখানে সন্তান প্রসবের সেবা দেওয়া হয় না। ব্র্যাকের উদ্যোগ এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবাকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে একসাথে কাজের মাধ্যমে ব্র্যাক এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ব্র্যাকের হেলথ সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড ইনোভেশন কর্মসূচির প্রধান ডা. ইমরান আহমেদ চৌধুরী বলেন, ব্র্যাকের ‘সুস্বাস্থ্য’ কেন্দ্র প্রমাণ করেছে- প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা দূর করা এবং সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আ. ন. ম. গোলাম মোহাইমেন, নাগেশ্বরী উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুজন সাহা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেডিকেল অফিসার ডা. মো: আতিকুর রহমান এবং ১২ নং নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। এই উদ্যোগের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছ প্রসূতি মা, নবজাতক শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত মানুষের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। ‘চার্মস’ প্রকল্পের আওতায় সপ্তাহে সাত দিন চব্বিশ ঘন্টা চালু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রশিক্ষিত ধাত্রী ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টরা (স্বাস্থ্যকর্মী) নিরাপদ সন্তান প্রসব সেবা দেবেন। এ ছাড়া অসংক্রামক রোগ নির্ণয়, টিকাদান এবং টেলিমেডিসিন সেবাও দেওয়া হবে। চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্য থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়া কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কাররা ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভকালীন ও প্রসব-পরবর্তী সেবা নিতে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ স্বাস্থ্যচর্চায় স্থানীয় মানুষদের সচেতন করে তুলতে কাজ করছেন। এর পাশাপাশি স্থানীয় দক্ষ ধাত্রী, কিশোর-কিশোরী দল এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কারগুলো দূর করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে সন্তান প্রসব করার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ‘চার্মস’ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো, আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকাদানের আওতায় নিয়ে আসা এবং দুর্যোগপ্রবণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ দুর্গম এলাকায় স্থানীয়ভাবে পরিচালিত মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই প্রকল্প থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতাগুলো ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য দুর্গম এলাকায় এ ধরনের উদ্যোগ বিস্তারের ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর