ঢাকা-টঙ্গী নতুন ডুয়েল গেজ লাইন হচ্ছে
![](https://kolomerbatra.com/wp-content/uploads/2023/07/Screenshot_3-10-700x390.jpg)
ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প (ডিটিজেডিএলপি) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৬৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
তবে সিগন্যালিং ও টেলিকমসহ ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে নতুন ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইনসহ মোট ৪টি লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে নতুন ২য় ডুয়েল গেজ লাইনসহ দুটি লাইন এবং ৮টি স্টেশনে ৩০ কিলোমিটার লুপলাইনসহ মোট ১৩৭ দশমিক ৯৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে অপারেশনাল ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হবে। তাই দ্বিতীয় সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
রবিবার রেল ভবনে প্রকল্পের টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনের জন্য ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের জন্য পরামর্শক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে রেলওয়ে। চুক্তিতে প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়া ও ভারতের কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের পক্ষে শুভ্রজিৎ জানা স্বাক্ষর করেন। এ সময় রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন ও ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত যেভাবে আমাদের পাশে ছিল, বাংলাদেশ-ভারতের সে সম্পর্ক রক্তের বাধনে লেখা থাকবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের সহযোগিতায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, তিস্তা ব্রিজ ও ভৈরব ব্রিজের মাধ্যমে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আজকের এই চুক্তির মাধ্যমে ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের মাধ্যমে ডিজাইন, সরবরাহ, ইনস্টলেশন এবং ৭টি স্টেশনে কম্পিউটার ভিত্তিক ইন্টারলক সিগন্যালিং সিস্টেমের পরীক্ষা-কমিশন করা হবে, যার মধ্যে নির্বাচিত লেভেল ক্রসিংগুলোর ইন্টারলকিং এবং অপটিক্যাল ফাইবারভিত্তিক টেলিকমিউনিক সিস্টেমের কাজ এবং আন্তঃসংযোগভিত্তিক টেলিযোগাযোগ সিস্টেমের জন্য সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ’৭৫ সালের পরে স্বাধীনতা বিরোধীরা কোনো উন্নয়ন করেনি, এমনকি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক ছিল, সম্পর্কের উন্নয়নের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রামের পর শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে। ছিটমহল সমস্যা, গঙ্গা চুক্তি, পার্বত্য শান্তিচুক্তিসহ দ্বিপক্ষীয় সমস্যাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। রেলওয়ে ব্যবস্থায় আমাদের ইন্টার সেকশন পয়েন্ট যেগুলো ছিল তার ৮টির মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ডবল লাইনে রূপান্তর করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ডবল লাইন করা হয়েছে। মন্ত্রী আখাউড়া থেকে আগড়তলা, খুলনা থেকে মংলা, ঢাকা থেকে পদ্মা ব্রিজ হয়ে ভাঙ্গা এবং ঢাকা থেকে কক্সবাজার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী অচিরেই উদ্বোধন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রকল্পের সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে লাইন ক্যাপাসিটি ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ১১২টি ট্রেন হতে ২৫০টি ট্রেনে এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ৪৪টি ট্রেন হতে ৯০টি ট্রেনে উন্নীত হবে। স্টেশনসমূহের লুপলাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি হওয়াতে দীর্ঘতর ট্রেন চালুর সুবিধা হবে। প্রায় সকল ট্রেনের যাত্রাসময় ২০ মিনিট হতে দেড় ঘণ্টা সাশ্রয় হবে। দুর্ঘটনা বিশেষ করে ডিরেইলমেন্টের সংখ্যা হ্রাস পাবে। রেলভূমির সীমানা প্রাচীর/ ফেন্সিং নির্মাণের মাধ্যমে এক্সেস কন্ট্রোল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। সর্বোপরি এ প্রকল্প দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।