মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কাজিপুরে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত, ৬ জনের অর্থদন্ড  উল্লাপাড়ায় আওয়ামীলীগ নেতা আটক সুজানগরে ইউএনওর কক্ষে জামায়াত নেতাদের মারধর করলেন বিএনপির নেতারা যশোরের শার্শা মূল্য তালিকা না থাকায়’৪ দোকানদার কে জরিমানা ভাঙ্গুড়ায় মাসব্যাপী ইফতার আয়োজন গন অধিকার পরিষদের ভালুকায় পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারার জের ধরে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে মারধর  দূর্গা মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর গাজীপুর নগরীতে গত ২৪ ঘন্টায় ডেবিল হান্ট অভিযানে গ্রেফতার-৫৮ ভাঙ্গুড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন উৎপাদন ব্যয় কমাবে যান্ত্রিক কৃষি, সমলয় ধান চাষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক 

মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত না হলে আসামিকে কনডেম সেলে নয়

রিপোর্টারের নাম : / ৫২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

সব ধরনের বিচারিক ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিকে কনডেম সেল বা নির্জন কারাকক্ষে রাখা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ পর্যবেক্ষণসহ এ রায় দেন। কনডেম সেলের বন্দিদের দুই বছরের মধ্যে সাধারণ সেলে স্থানান্তর করতে জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে।

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দিদের সঙ্গে অন্য বন্দিদের মতোই আচরণ করা উচিত।

ব্যতিক্রম পরিস্থিতি যেমন—ছোঁয়াচে রোগ বা সমকামিতা থাকলে বিশেষ বিবেচনায় যেকোনো বন্দিকে বিচ্ছিন্ন কক্ষে রাখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দণ্ডিত ব্যক্তির উপস্থিতিতে শুনানি হতে হবে। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বন্দিদের অন্য বন্দিদের মতো জামিন আবেদনের অনুমতি দেওয়া উচিত। উপযুক্ত ক্ষেত্রে হাইকোর্টের উচিত ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুসারে আবেদনকারীকে জামিন দেওয়া।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত বা দণ্ডিতদের কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা কারাগারের কনডেম সেলের তিন কয়েদি। তাঁরা হলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও খাগড়াছড়ির শাহ আলম। বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তাঁদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) হাইকোর্টে বিচারাধীন।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুসারে বিচারিক আদালতে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে সে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন লাগে।

তা ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের আসামিরা প্রথমে হাইকোর্টে, পরে আপিল বিভাগে আপিল করতে পারেন। সর্বোচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলে তার পুনর্বিবেচনা চেয়েও আবেদন করতে পারেন দণ্ডিতরা। সেটি খারিজ হলে শেষ চেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করার বিধান আছে। রাষ্ট্রপতি সে আবেদন নাকচ করলেই কেবল মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আইনগত বৈধতা পায়। কিন্তু বিচারিক আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার পরই দণ্ডিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা হচ্ছে।

আবেদনের ২০ দিন পর রিটটির শুনানি হয়। তখন রাষ্ট্রপক্ষের অনুরোধে আদালত রুল জারি না করে কনডেম সেল ও কনডেম সেলে বন্দিদের সংখ্যা, কারাগারের সংস্কার, ব্যবস্থাপনা, কনডেম সেলের সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন দায়িত্ব নেন কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার। এরপর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ ভেঙে গেলে ২০২২ সালে রিটটি হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চে তোলা হয়। শুনানির পর ওই বেঞ্চ ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল রুলসহ আদেশ দেন।

রায়ের পর রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, ‘নতুন জেলকোড ও কারা আইন করছে সরকার। হাইকোর্ট বলছেন, রায়ের পর্যবেক্ষণ যেন নতুন আইনে প্রতিফলিত হয়, সে বিবেচনা করতে। এ ছাড়া মৃত্যদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দিদের বিষয়ে তথ্য চাইলে (সাংবাদিক, গবেষক) তথ্য অধিকার আইন অনুসারে তথ্য দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

এ ছাড়া তথ্য অধিকার আইন অনুসারে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) সংক্রান্ত যাবতীয় বার্ষিক প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করে তা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।

শিশির মনির আরো বলেন, পর্যবেক্ষণে আদালত নির্দিষ্টভাবে সাগর-রুনির ঘটনা উল্লেখ করে বলেছেন, প্রায় ১২ বছর ধরে তদন্ত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তদন্ত শেষ হয়নি। বিচার তো আরো পরের ধাপ। আদালত বলেছেন, ‘আমাদের দেশে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হতে ৫ থেকে ১০ বছর লেগে যায়। এই ধরনের বিলম্ব যেখানে হয়, সেখানে মৃত্যুদণ্ডের আসামিকে নির্জন কারাকক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বন্দি রাখাটা ডাবল শাস্তি। নির্জন কারাকক্ষে বসবাস তাঁর সাজা নয়, সাজা মৃত্যুদণ্ড।’

ভারতের সুপ্রিম কোর্টও এসংক্রান্ত রায় দিয়েছেন। ওই রায় এ রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ভূমিকা রাখে বলে জানান আইনজীবী শিশির মনির।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর