বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:২২ অপরাহ্ন

লালমনিরহাটে ঠান্ডার প্রকোপে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট: / ১৫২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২

হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাট। এই জেলার হাসপাতাল গুলোতে ঠান্ডার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

জানা গেছে, হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হিসেবে লালমনিরহাটে কিছুটা আগেই শীতের প্রভাব পড়ে। বিদায় নেয়ও বেশ কিছুটা সময় পড়ে। যার কারনে শীতের ঠান্ডা কিছুটা দীর্ঘ সময় থাকে এ জেলায়। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ জুড়ে চলছে শৈত্য প্রবাহ। শীতের ঘন কুয়াশার সাথে যুক্ত হওয়া শৈত্য প্রবাহের ঠান্ডা বাতাসে অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন প্রাণিকুল। মাঝে মধ্যে দুপুর গড়িয়ে সুর্যের দেখা মিললেও বৃহষপতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সুর্যের দেখাই মেলেনি। ফলে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়েছে কয়েকগুন।

ঘন কুয়াশার সাথে শৈত্য প্রবাহের ঠান্ডা বাতাসে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে প্রাণিকুল। মানুষ, জীব জন্তুরসহ ফসলের ক্ষেতেও এর প্রভাব পড়েছে। নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখি এবং ফসলের ক্ষেত। ঘন কুয়াশার কারনে ফসলের ক্ষেতেও নানান রোগ দেখা দিচ্ছে। কৃষকরা আলুসহ সকল সবজি ক্ষেতে এবং আমনের বীজতলায় শীত সহনীয় বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহের কারনে খুব একটা কাজে লাগছে না। গৃহপালিত পশু পাখি নিয়েও বড় বিপাকে পড়েছেন খামারীসহ কৃষকরা।

শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা। জেলার ৫টি সরকারী হাসপাতালেই রোগীর ভিড় আগের থেকে বেড়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী আসছে হাসপাতাল গুলোতে। আন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। খুব সহজে ছাড়ছে না শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দ্দি, কাশি, নিউমেনিয়াসহ নানান ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

প্রিয়তমা রানী তার এক বছরের ছেলে দেবজিৎকে নিয়ে এসেছেন আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আজমল হকের কাছে। তিনি বলেন, তার সন্তান দীর্ঘ এক মাস ধরে জ্বর,সর্দ্দি,কাশিতে ভুগছে। কোন ওষুধে কাজ হচ্ছে না। কাশির কারনে রাতে ঘুমাতেও পারছে না। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে এসেছেন। তার সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন চিকিৎসকরা।

সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আব্দুল খালেক (৬২) বলেন, কয়েকদিন থেকে ঠান্ডাজনিত কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে, রাতে ঘুমাতে পাইনা। ঘন কুয়াশার কারণে চলাফেরাও করতে পারিনা। আমাদের গ্রামের খুব ঠান্ডা, তাই ডাঃ কাছে এসেছি।

জেলার হাসপাতাল গুলো ঘুরে রোগীদের উপচে পড়া ভির দেখা গেছে। ডিসেম্বর মাসেই রোগী বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। এক একটি হাসপাতালে শুধু বহিঃবিভাগে দৈনিক রোগী আসছেন ৩/৪ শত। যার অধিকাংশ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। তার মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তপন কুমার বলেন, হাসপাতালে ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখতে হচ্ছে। ঠান্ডা বাড়ায় শিশুরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে আসা অধিকাংশ শিশু নিউমেনিয়ায় ভুগছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে গ্যাস দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঠান্ডা জনিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষায় শিশুদের সাধ্যমত উষ্ণতা দিতে, ঠান্ডা পায় এমন স্থানে শিশুদের না নেয়া, সমস্যা হলে বিলম্ব না করে দ্রুত সরকারী হাসপাতালে আসা এবং ঠান্ডাবাসি খাবার পরিহার করে পর্যাপ্ত শীতকালিন সবজি ও ফলমুলে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস করার উপর পরামর্শ দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর