রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:২১ অপরাহ্ন

খেলাপি ঋণের তথ্য যাচাই করবে অডিট ফার্ম

রিপোর্টারের নাম : / ৩০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪

বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের তথ্যে কোন ধরনের ফাঁকি দিচ্ছে কিনা-তা যাচাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অডিট ফার্মকে দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর এমন আরও অন্য অনিয়ম শনাক্ত করতে পারলে সে বিষয়ে প্রতিবেদন শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি হলে, আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে না পারার আশঙ্কা তৈরি হলে, আবশ্যিক মূলধন ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে অডিট ফার্মগুলোকে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোকে অডিট করার বিষয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো এই নীতিমালা জারি করা হলো। এতে অডিট ফার্ম কিভাবে নিয়োগ করতে হবে, তাদের কাজের পরিধি কি হবে-তা উল্লেখ করা হয়েছে। কাজের জবাবহিদিতা ও দায়িত্ব আরও বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে অডিট ফার্মগুলোর ক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংকের অনিয়ম ও জাল-জালিয়াতি শনাক্ত করতে তাদের এখন জোরালোভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

অডিট ফার্মের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও মূল কাজ করবে। তবে অডিট ফার্মগুলোকে এখন আরও বেশি দায়িত্ব ও জবাবহিদি করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়, অডিট ফার্মগুলো ব্যাংকে নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অনিয়ম ও জাল-জালিয়াতির ঘটনা শনাক্তে বেশি জোর দেবে। একই সঙ্গে তারা ব্যাংকগুলোর মৌলিক সূচকের বিষয়েও গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করবে।

ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা জানার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক অডিট ফার্মগুলোকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে তারা নিরীক্ষা বছরের নবম মাস ভিত্তিক একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন তৈরি করে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করবে। এটি অন্য কাউকে দিতে পারবে না। ওই প্রতিবেদনে ব্যাংকের ঋণ শ্রেণিকরণ ও ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ, অন্যান্য সম্পদ এবং বিনিয়োগের শ্রেণিকরণ ও তার বিপরীতে রক্ষিতব্য প্রভিশনসহ অন্যান্য প্রভিশন বিষয়ক কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তা চিহ্নিত করতে হবে।

ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে যেসব তথ্য বা প্রতিবেদন পাঠায় সেগুলোতে কোনো ফাঁকি বা অনিয়ম রয়েছে কিনা সেগুলোও শনাক্ত করতে হবে। শ্রেণিকৃত বা খেলাপি ঋণের তথ্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) যথাসময়ে দাখিল করে কিনা, দাখিল করা তথ্যের সঠিকতা কতটুকু এসব তথ্য যাচাই করতে হবে।

ঋণ শ্রেণিকরণ, ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও মুনাফা হিসাবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালিত হয়েছে কিনা এসব বিষয়ে তথ্য থাকতে হবে। নিরীক্ষাধীন শাখাগুলোতে অবলোপন করা, পুনঃতফশিলকৃত/, গঠিত ঋণ হিসাব, মওকুফকৃত সুদসংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পালিত হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। নিরীক্ষাধীন বছরে মোট অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ, তা হতে আদায়ের পরিমাণ এবং আদায়ের জন্য ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো কার্যকর কিনা সে বিষয়ে মতামত দিতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়, ব্যাংকে ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হলে (যে সময়কালেই সংঘটিত হোক না কেন যদি তা আর্থিক প্রতিবেদনে প্রতিফলিত নাও হয়ে থাকে), বা ব্যাংকের সংরক্ষিত মূলধন আবশ্যক মূলধনের ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বা নামার আশঙ্কা তৈরি হলে, বা পাওনাদারদের পাওনা প্রদানের নিশ্চয়তা বিঘ্নিত হলে অডিট ফার্মকে তা অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষ প্রতিবেদনের মাধ্যমে অবহিত করতে হবে।

কোনো অডিট ফার্ম ভুল তথ্য দিলে বা প্রকৃত তথ্য আড়াল করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবে। ফলে তারা আর কোনো ব্যাংক অডিট করতে পারবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর