শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন

নাইক্ষ‍্যংছড়ির সীমান্ত থেকে ৩০০ পরিবার সরিয়ে নেবে প্রশাসন

রিপোর্টারের নাম : / ৯৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ওপারে মিয়ানমার অংশে উত্তেজনার কারণে বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ির সীমান্ত থেকে স্থানীয় কিছু পরিবারকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ৩০০ পরিবারের প্রায় দেড় হাজার সদস্যকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশসাক (ডিসি) ইয়াসমিন পারভিন।

তিনি জানান, পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রোববার সীমান্তের কাঁটাতার বেড়াসংলগ্ন তুমব্রু, ঘুমধুম, হেডম‍্যানপাড়া, ফাত্রা ঝিরি, রেজু আমতলী এলাকায় বসবাসকারীদের সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সোমবার সকালে নিজে উপস্থিত থেকে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

এদিকে বান্দরবান সীমান্তে গোলাবর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার এর দায় ঠেলে দিয়েছে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির প্রতি। দেশটির দাবি, আরাকান আর্মি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ চুরি করে বাংলাদেশে গুলি করছে, যাতে করে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়, বাংলাদেশ মিয়ানমারকে অবিশ্বাস করে।

সীমান্তে গোলাবর্ষণের প্রতিবাদে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করার পর তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে এই ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। রোববার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই চলছে মিয়ানমার সেনাদের। এ লড়াইয়ের মধ্যে মিয়ানমার সেনাদের ছোড়া বেশ কিছু মর্টার শেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া চারটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক যুবক নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ পাঁচজন।

এসব ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে মোট চারবার তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। সর্বশেষ তলব করা হয় রোববার সকালে। মিয়ানমারের দূত কী বলেছেন, সেটি তুলে ধরে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব জানান, অং কিউ মোয়ে দাবি করেছেন, এগুলো (গোলাবর্ষণ) আসলে এটা একটা দুর্ঘটনা।’

রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘মিয়ানমার আর্মি বলছে আরাকান আর্মি তাদের গুলি-অস্ত্র চুরি করে বাংলাদেশে গুলি করছে। যাতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। বাংলাদেশ যাতে মিয়ানমারকে অবিশ্বাস করে। আসলে কে দায়িত্ব নেবে, তা নিরূপণ করা আসলে কঠিন। তারা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়েও গোলা পাঠিয়ে থাকতে পারে।

‘তারা (মিয়ানমার) অনেক সময় এটাও বলে থাকে বা এমন দোষও দেয়, আরাকান আর্মি আমাদের এখান থেকে গিয়ে হামলা করে।’ ঢাকার উদ্বেগের বিষয়ে মিয়ানমারের দূত কী বলেছেন- এই বক্তব্য তুলে ধরে খোরশেদ আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত আমাদের তেমন কিছু জানাননি। উনি জানিয়েছেন, আমাদের এই বক্তব্যগুলো নেপিডোকে জানাবেন।’

মিয়ানমারকে বাংলাদেশ কী বার্তা দিয়েছে

এই প্রশ্নে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা বলেছি, হ্যাঁ, এটা আপনাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনারা এটা সামলাবেন। এটা যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশের সীমান্তের এপারে ছড়িয়ে না পড়ে। এ বিষয়ে সতর্ক হবেন। ‘এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা মিয়ানমারকেই গ্রহণ করতে হবে। এটা তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের কোনো গোলা যেন আমাদের দেশে না আসে, সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না। সেটা সেখার দায়িত্ব মিয়ানমারের। বাংলাদেশ সব সময়ই দায়িত্বশীল ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র। আমরা অনেক দিনই ধৈর্য ধরে এই বিষয় দেখে আসছি। ‘আমরা তাদের বলেছি, আপনারা দ্রুত আপনাদের সমস্যা সমাধান করুন। যাতে আমাদের এখানে আর রক্তারক্তি না হয়। আমাদের এখানে যেন কোনো প্রাণ আর না যায়।’

সচিব বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমরা যে বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়েছি, তাতে কোনো উইকনেস বা দুর্বলতা নেই। যা অনেকেই নতজানু বলে থাকে তার কোনো কিছুই আমাদের বক্তব্যে নেই। সেই ধরনের কথাই আমরা বলছি, যা আমাদের শক্ত অবস্থানকেই তুলে ধরে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর