শিরোনামঃ
একই পরিবারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির দুই কার্ড ৮ বছরে চাল পাইনি এক ছটাক! রায়গঞ্জে কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপ পূনঃগঠন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত সোনার বাংলা এসএসসি ২০০০ ব্যাচের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে রোজাদার ও শিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ রায়গঞ্জে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে মৌসুমী বন্যায় আগাম সাড়াদান প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রীর আত্মহত্যা,মেয়ের পরিবারের অভিযোগ হত্যা ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩৩ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার লালমনিরহাটে বিএসএফ গুলিতে আহত বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু! ‘শূন্যের বৃত্ত’ থেকে বের হলো বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত স্বাধীনতা দিবসে ভারত রাশিয়া ও চীনের শুভেচ্ছা ঈদযাত্রায় এবার স্বস্তির আশা চীনের পর বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার আসিয়ান অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান দেখতে কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা টিকিট কালোবাজারি বন্ধে জিরো টলারেন্স: রেলমন্ত্রী প্রশিক্ষণে আসবেন ভুটানের ডাক্তার-নার্স অসাম্প্রদায়িক মানবিক ও স্মার্ট দেশ গড়ার প্রত্যয় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার চেতনায় উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ব: প্রধানমন্ত্রী

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট থেকেঃ

ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষের

কলমের বার্তা / ২২৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ২০ জুন, ২০২২

কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা নদীর বাম তীরে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষের।

সোমবার (২০ জুন) দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯১ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ মিটার) বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে রোববার (১৯ জুন) সকাল ৬টায় একই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিকেলে কমে যায়। ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ জানান, গত দুই সপ্তাহ থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে গত মাসের শুকনো মরুময় তিস্তার পানিতে ফুলে ফেঁপে ওঠে।

গত সপ্তাহ থেকে তিস্তা নদীর পানি কখনো কখনো বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর এবং ৮/১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার সৃস্টি হয়। বন্যার পানি নামতে না নামতেই আবারও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চলের প্রায় অর্ধালক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।

সোমবার (২০ জুন) সকালে আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করে তিস্তার পানি। বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে দুপুর ১২টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। অতিরিক্ত পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ছোট ছোট নদী ও খাল ভরেছে পানিতে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। এজন্য তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও খুব সহজেই মুক্তি পাচ্ছে না পানিবন্দি পরিবারগুলো। পানি নেমে গেলেও আবার বাড়ছে। এভাবে কেউ কেউ টানা ৫/৬ দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। পানিবন্দি এসব পরিবারের মাঝে শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

বন্যার পানিতে ডুবে আছে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল বাদাম। বিগত বন্যায় পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া আর তামাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি বন্যায় বাদাম ক্ষেত ডুবে নষ্ট হয়েছে। সব মিলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চলের চাষিরা।

নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল গত ৪/৫ দিন ধরে ডুবে আছে। এসব এলাকার ৩০/৩৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ।

পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। আদিতমারীর সলেডি স্প্যার বাঁধ-২তে যাওয়ার সড়কটির অর্ধেকাংশ ধসে গেছে। বাকিটুকু ধসে গেলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। সব মিলে নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষের। তিস্তার বাম তীরের প্রায় ১০/১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি উঠেছে।

নদী ভাঙনও বেড়েছে কয়েকগুন। মুহূর্তেই বিলীন হচ্ছে বসতভিটা আবাদি জমি আর স্থাপনা। তিস্তার ভাঙনে শনিবার দিনগত রাতে বিলীন হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর ডাউয়াবাড়ি আলহাজ্ব আছের মামুদ সরকার গণনিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও উত্তর ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কমিউনিটি ক্লিনিক ভাঙনের মুখে পড়েছে। চলতি মৌসুমে ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ৬০টি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আজাহারুল ইসলাম আতিক।

মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, গত সপ্তাহ ধরে তিস্তার পানি বাড়া কমা করছে। প্রথম দিকে আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি ছিল। তাদের ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। গতরাতের বন্যায় আরও দ্বিগুন হয়েছে পনিবন্দির সংখ্যা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ পয়েন্টে তিস্তার পানি সোমবার বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি প্রবাহ আরও কিছুটা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, জেলায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে বলে তথ্য রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ১৫০ মেট্রিক টন জিআর চাল এবং শিশু খাদ্য, গো-খাদ্য ও শুকনো খাবার বিতরণের জন্য সর্বমোট ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নদী ভাঙনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীনের খবর জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

86


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর