শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সুন্দরগঞ্জে মা-মেয়েকে উত্যক্ত করায় মাইকিং করে দুই গ্রামে সংঘর্ষ ‎বৃষ্টিতে ‘বিদ্যুৎবিভ্রাট’, মোমবাতির আলোয় এসএসসি পরীক্ষা! লালমনিরহাটে আ.লীগ নেতা সাবেক পৌর কাউন্সিলর গ্রেপ্তার লালমনিরহাটে বিক্রি করা দেড় বছরের সন্তানকে ফেরত পেতে থানায় অভিযোগ মায়ের ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, বেনাপোল থেকে ফেরত গেল ৪ ট্রাক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে হাট বসানোর চেষ্টা বিএনপি নেতার, ইউএনও বরাবর অভিযোগ! গাজীপু‌রে প্রতারনা ও মিথ্যা মামলা দি‌য়ে হয়রানীর প্রতিবা‌দে ওয়ালটন কর্তৃপ‌ক্ষের বিরু‌দ্ধে মানববন্ধন বেনাপোল কাস্টমসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় বেনাপোল বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান সলঙ্গায় মৎস্য ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ ২ জন গ্রেপ্তার

গাজীপুরে দুর্নীতিবাজ ভূমি কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

নাজমুল হক গাজীপুর থেকেঃ / ৬২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

গাজীপুরের দুর্নীতিবাজ ভূমি কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছ ভুক্তভোগী পরিবার।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানব অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামান্না রহমান জ্যোতি এবং কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ মিয়ার যোগসাজশে প্রকৃত জমির মালিকদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সমাবেশে ভুক্তভোগী এক জমির মালিক আব্দুল মালেক বলেন , যে দলিলের সূত্রে জবরদখলকারী প্রতিপক্ষ জমির মালিকানা দাবি করেন, সেই দলিলে জমির দাগ নম্বর ভিন্ন হওয়ায় (আলোচিত জমির ক্ষেত্রে ওই ভায়া দলিল জাল) বিজ্ঞ আদালত তা বাতিল করে দেন। ওই বাতিল হওয়া সহায়ক দলিল দ্বারা করা নামজারি জমাভাগ অবিলম্বে বাতিল চেয়ে আমি ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি মিস কেস (নম্বর ২৪৯/২২) করি।

জবরদখরকারীদের নামজারি জমাভাগ অবিলম্বে বাতিল হওয়ার অবস্থায় থাকলেও ওই মিস কেস টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামান্না রহমান জ্যোতি ইচ্ছাকৃতভাবে বাতিল না করে কালক্ষেপণ করে জবরদখলকারীদের সুবিধা দেন। এমনকি তিনি গত আড়াই বছরে শুনানির সময় আমাকে কোনো কথাই বলতে দেননি। ফলে আমরা প্রকৃত মালিকরা আজও আমাদের সম্পত্তির ন্যায্য অধিকার ফিরে পাইনি। ওই মিস কেসটি এখনো টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে ঝুলে আছে।

অপরদিকে, ভিন্ন দাগ ও অবস্থানের কারণে আদালতের মাধ্যমে বাতিলকৃত জাল ভায়া দলিলসূত্রে মালিকানা দাবিকৃত জমিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারার অধীন স্থাবর সম্পত্তি তথা জমি জমা সম্পর্কিত বিরোধ প্রসঙ্গে অস্থায়ী আদেশ চেয়ে প্রতিপক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান, দেওয়ান মোজাম্মেল হক, ও কৃষ্ণ গোপাল সাহা গাজীপুরের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা নম্বর ৫৪৬/২৪, ৫৪৭/২৪ ও ৫৪৮/২৪ দায়ের করেন।

আদালত সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কাছে ৩টি মামলার সংশ্লিষ্ট নালিশি জমির দখলীয় অবস্থার প্রতিবেদন তলব করেন। সে মতে আদালত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে নালিশি জমির সরেজমিন তদন্ত করে দখলীয় অবস্থার প্রতিবেদন দিতে বলেন।

কিন্তু কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ মিয়া ভূমিদস্যুদের সহযোগিতা করতে ও ন্যায়বিচার ব্যাহত এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রদান করে ভূমিদস্যুদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।এতে প্রকৃত মালিকদের সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং আনুমানিক ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি এবং ন্যায়বিচার ব্যাহত হবে।

আব্দুল মালেক আরও বলেন , ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ মিয়া ভিন্ন তিনটি প্রতিবেদনে যে সব মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন সেই অনুসারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদালতে ওই মিথ্যা তথ্যের প্রতিবেদনই প্রেরণ করেছেন। এতে ন্যায় বিচার সম্ভব নয়। ওই মিথ্যা তথ্যের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত কীভাবে ন্যায় বিচার করবেন?

এদিকে, কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তাকে আলোচিত জমি প্রসঙ্গে আব্দুল মালেককে বলতে শোনা যায়, “মামলার শুনানির দিন আমার কাছে আসতেন, আমি এসি (ল্যান্ড) স্যারকে দিয়ে এডিএম স্যারকে ফোন করাইতাম, আর বলতাম এটা মিসটেক হইছে। এরপর এডিএম স্যার সংশোধন করে দিতেন।

গাজীপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি জুলীয়াস চৌধুরী বলেন, কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে জাল দলিলের মাধ্যমে নামজারি ও মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্নীতি বেড়েই চলেছে।তিনি আরও বলেন, “জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই দুর্নীতির জালে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দুর্নীতিগ্রস্ত ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায় বিচারের আশায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন ভোক্তাভোগী ও জমির মালিক সুইটি বেগম, করিমন নেছা, হাবেল মিয়া, হালিম উদ্দিন, রহিম উদ্দিন, করিম মোল্লা প্রমুখ।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অর্ধশতাধিক সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর