তিস্তায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন!
আশরাফুল হক, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি কমলেও বেড়েছে ভয়াবহ নদর ভাঙন। নদী ভাঙ্গানে বিলীন হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষ। ইতিমধ্যে নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিকের বেশি বসতভিটা ও বিভিন্ন স্থাপনা।
হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদ্রাসা। প্রতি বছর নদী ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে বসতভিটা আর আবাদি জমিসহ নানা স্থাপনা। দুই দিকের ভাঙনে উপজেলার মানচিত্র প্রতি বছর সংকুচিত হয়ে আসছে।চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক বসতভিটা তিস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
গত কয়েক দিনে হাতিবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না, ডাউয়া বাড়ি, পাটিকাপাড়া, শতাধিক পরিবারের আশ্রয়স্থল বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছে। অনেকে বাঁধের রাস্তায় ও সরকারী জমি এবং স্কুলের মাঠে আশ্রায় নিয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে হাতীবান্ধার গড্ডিমারীর তালেব মোড়ের ওয়াপদা বাঁধ ও হাতীবান্ধা বাইপাস সড়ক, পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি কাজের অংশ হিসেবে স্পার বাঁধ ও চন্ডিমারী বাঁধ রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি গ্রামের আবেদ আলী বলেন, তিস্তার পানি কমার সাথে সাথে মহুর্তেই ঘরবাড়ি ও বসতবাড়ি ভাঙন দেখা দেয়। এতে প্রায় ৭০ টি ঘর বাড়ি নদীতে বিলিন হয়। অনেক ঘরবাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে পড়ছেন।
সিন্দর্না গ্রামের আফিয়ার রহমান বলেন, চোখের সামনে বসতভিটা নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। সিন্দুর্না ইউনিয়নের এক ও দুই নং ওয়ার্ড প্রায় বিলিনের পথে। তিস্তা নদী পাড়ের বাসিন্দাদের একটাই দাবি, আমরা রিলিফ বা ত্রাণ চাই না, তিস্তার বাঁধ চাই। দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নের দাবী করেন।
হাতীবান্ধা উপজেলায় ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ড নদী তীরবর্তী। সব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েক দফা পানি বৃদ্ধির ফলে ৭০টি বাড়ি বিলীন হয়েছে। পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুল আলম সাদাত বলেন, আমার ইউনিয়নে আংশিকসহ ৭টি ওয়াডের প্রায় ১৫ শত পরিবার পানি বন্দি এবং প্রায় ৭০টি বসত ভিটে নদীগর্ভে বিলীন হয়।
পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসাদের। তিস্তার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রক্ষায় কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।