শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

দুধের দাম বাড়েনি, খরচ বেড়েছে বিড়ম্বনায় উল্লাপাড়ার প্রান্তিক দুধ ব্যবসায়ীরা

রিপোর্টারের নাম : / ২১৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আল-আমিন, উল্লাপাড়া :

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় দুধ ব্যবসা বর্তমানে চরম সংকটে পড়েছে। গরুর খাবারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে দুধের বাজারমূল্য একই জায়গায় আটকে আছে। এতে খামারিরা লোকসান গুনতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস  সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন উল্লাপাড়া উপজেলায় গড়ে ৪০-৫০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। প্রায় ৭০-৮০ হাজার প্রান্তিক খামারি এ খাতে জড়িত থেকে সংসারের চাকা সচল রাখেন। কিন্তু উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দাম না থাকায় তারা এখন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

খামারিদের অভিযোগ, একদিকে ভুসি, খইল, খড়সহ বিভিন্ন খাদ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বর্ষায় চারণভূমি পানিতে ডুবে থাকায় গরুর জন্য কাঁচা ঘাসও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খরচ বহুগুণ বেড়ে গেলেও দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে লিটারপ্রতি মাত্র ৫৫-৬০ টাকায়।

প্রান্তিক খামারি শাহজাহান জানান, আগে খরচ মেটাতে কষ্ট হলেও কিছু লাভ থাকত। এখন এক লিটার দুধ বিক্রি করে যেটাকা পাই, তা দিয়ে গরুর খাবার কেনাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন ঋণের বোঝা বাড়ছে। এভাবে খামার টিকিয়ে রাখাসম্ভব নয়।

একই অভিযোগ করেন আরও কয়েকজন খামারি। তারা জানান, অনেকেই ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে খামার শুরু করেছিলেন। কিন্তু দুধের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তারা এখন কিস্তি শোধ করতেও হিমশিম খাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে অনেক খামারি তাদের খামার বন্ধ করে দিতে শুরু করেছেন।

স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি দুধ উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না করা হয়, তবে প্রান্তিক খামারিরা একে একে এ খাত থেকে সরে যাবেন। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দেশীয় দুধ উৎপাদনও কমে যাবে। ভবিষ্যতে দেশকে আরও বেশি নির্ভর করতে হতে পারে আমদানি করা বিদেশি গুঁড়া দুধের ওপর।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শেখ এম এ মতিন জানান, বর্তমানে গরুর খাবারের দাম অত্যধিক হওয়ায়খামারিরা তাদের উৎপাদিত দুধের যথাযথ দাম পাচ্ছেন না। উপজেলায় প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ দুধ উৎপাদিত হয়।তবে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা নিয়মিত নজরদারি করছি।

খামারি ও দুধ ব্যবসায়ীরা দ্রুত সরকারি উদ্যোগ ও সহায়তা কামনা করেছেন। তাদের দাবি, দুধের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, গরুর খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং খামারিদের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিত করা না হলে এ খাত বড় ধরনের সংকটে পড়বে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শুধু খামারিরাই নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও দুধভিত্তিক শিল্পও।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর