শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ অপরাহ্ন

নদী ভাঙ্গনের কবলে সরকারি বিদ্যালয়; চর ছেড়েছে জনবসতি

রিপোর্টারের নাম : / ৭০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গোলাম কিবরিয়া খান, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ  সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের যমুনা নদীর চরাঞ্চলের মল্লিকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। ভাঙ্গনের হুমকিতে গ্ৰাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে ৪ শতাধিক বসতি। নদী তীরবর্তী স্থান থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে এমনটা ঘটেছে ধারণা স্থানীয়দের। খোঁজ নিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলার বিরুদ্ধে

আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানিয়েছে প্রশাসন।

সরেজমিনে, উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের যমুনা নদীর চরাঞ্চলের মল্লিকপাড়া চরের পশ্চিম পাশে নদী তীরবর্তী স্থান, শুভগাছা ইউনিয়নের তারাকান্দি চর এবং খাসরাজবাড়ি ইউনিয়ন সীমানার থেকে শতাধিক ড্রেজার ও বাল্কহেড ব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়। এবং মল্লিকপাড়া চর থেকে ভাটির দিকে অন্তত ৫ কিলোমিটার নদী তীর জুড়ে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। শতশত একর আবাদি জমি নদীতে বিলীননের শংকা সৃষ্টি হয়েছে।

মল্লিকপাড়া চরের বাসিন্দা সাহেব আলী (৫৫) বলেন, গত ২ বছরে ৭ বার বাড়ি ভেঙেছে, তীরবর্তী স্থান থেকে বালু তোলার ফলে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। একই গ্ৰামের বাসিন্দা আশরাফ আলী (৫২) জানান, প্রায় ২০ বছর আগে এই চর জেগে ওঠে, এখানে মল্লিকপাড়া, শ্রীপুর ও বদুয়ার পাড়া গ্ৰামের ৪ শতাধিক বাসিন্দা বসতি গড়ে তোলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য স্বপন মিয়া বলেন, নদী ভাঙ্গনের ফলে মল্লিকপাড়া চরের সকল বসতি অন্যত্র চলে গেছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শাহাদাত বলেন, নদী ভাঙ্গনে ক্লিনিকের অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে, অস্থায়ী স্থান থেকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে।

ভাঙ্গন কবলিত ৪০ নং মল্লিকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহার বলেন, বিদ্যালয়ের সন্নিকটে নদী ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভাংছে, যে কোনো সময় বিদ্যালয় বিলীন হয়ে যেতে পারে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দুটি টিনের ঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, টিন ও লোহার এঙ্গেলে তৈরি বড়ঘরটি ঝুঁকিতে রয়েছে। ফান্ডের কারনে সরিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ে মোট ৬৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ফান্ড চাওয়া হয়েছে।

ইজারা বহির্ভূত স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী ভাঙ্গন বিষয়ে কাজিপুর বালুমহালের ইজারা গ্ৰহীতা আব্দুস সাত্তারের মতামত জানতে চেষ্টা করলে তার ২ টি মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

অবৈধ বালু উত্তোলন বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাইমা জাহান সুমাইয়া বলেন, ইজারা বহির্ভূত স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবং বিদ্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর