পাবনায় জমি দখল নিতে বিষ দিয়ে ফসল নষ্ট ও মারধরের অভিযোগ

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় বড় ভাইয়ের বিক্রি করা জমি দখল নিতে বিষ প্রয়োগ করে ক্ষেত নষ্ট ও ফসল কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জমির ক্রেতাদের ওপর হামলা-মারধর এবং হুমকি-ধামকি দিয়ে জমি দখলেরও চেষ্টা করছেন অভিযুক্তরা।
এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা পাবনার চাটমোর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না। বিভিন্ন সময় বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে হামলা এবং মারধর করা হচ্ছে।
অভিযুক্তরা হলেন- পাবনার চাটমোর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের আলমনগরের মৃত গহের আলী সরকারের দুই ছেলে গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া। গোলাম কিবরিয়া পাবনার শহরের আরএম একাডেমির প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মৃত গহের আলী সরকারের বড় ছেলে গোলাম মওলার সন্তানরা বিদেশে এবং তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করায় জমিগুলোর দেখভাল করে ভোগদখল করে আসছিলেন দুই ভাই গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া। কিন্তু সম্প্রতি গোলাম মওলা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমিগুলো প্রতিবেশীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এনিয়ে ক্ষুব্দ হোন জমির উপকারভোগী দুই ভাই। তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে তাদের বড় ভাইয়ের জমি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন এবং হুমকি দেন। সর্বশেষ গত ১১ মার্চ কোনো এক সময়ে জমির ক্রেতা একই গ্রামের মোঃ আঃ সোবাহান সরকারে ছেলে মোঃ সানিউল ইসলাম ধান ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করে ফসল নষ্ট করা হয়। এর আগে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সোবহান সরকারের বাড়িতে হামলা করে তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়। এছাড়াও একই এলাকার একাধিক জনকে হুমকি-ধামকি দিয়ে জমির দখল নেয়ার চেষ্টা করছেন অভিযুক্তরা। ইতোমধ্যে আব্দুল জলিলসহ কয়েকজনের জমি দখলও নিয়েছেন।
এলাকাবাসীরা জানান, গোলাম মওলা সাদা মনের মানুষ। তার সন্তানরা স্থায়ীভাবে বিদেশে বসবাস করেন। তিনিও ঢাকা থেকে বিদেশে চলে যাবেন। এজন্য গ্রামের জমিগুলো বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার ভাইয়েরা জমিগুলো নিজেরাও কেনেন না এবং বাহিরেও বিক্রি করতে দেন না। গোলাম মওলা স্বপরিবারে বিদেশে স্থায়ী হলে এই জমিগুলো বিনা টাকা-পয়সায় ভোগদখলের সুযোগ পাবেন তার ভাইয়েরা- এজন্য এলাকাবাসীদের জমি কিনতে নিষেধ করেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি গোলাম মওলার অনুরোধে তার জমি কেনেন এলাকাবাসী এবং জমিগুলো ক্রেতাদের দখলে দিয়ে তিনি ঢাকায় চলে যান। এরপর থেকেই তার ভাইয়ের ক্রেতাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করছেন।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা বকুল ও গোলাম কিবরিয়া। তাদের দাবি- ‘১৯৯৫ সালে বাবা মারা যাওয়ার পরই বড় কাগজপত্র নিয়ে ঢাকায় চলে গেছেন। কিন্তু এইসব জমির কোনও বাটোয়ারি তিনি করেননি। বাটোয়ারা না করেই তিনি এখন ভালো ভালো অংশটুকু অন্যদের কাছে বিক্রি করছেন। আমরা বার বার বলার পরও তিনি আমাদের সঙ্গে বসেন না, কথাও বলেন না। আর জমিতে বিষ দিয়ে কে বা কারা ফসল নষ্ট করেছে সেবিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষ প্রয়োগ করে ক্ষেত নষ্ট করার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় সকল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।