পিঠা উৎসবের আনন্দ মেলায় মুখরিত সরোবর পার্ক এন্ড রিসোর্ট!
মাইদুল ইসলাম মারুফ,গাইবান্ধা: শীতের কুয়াশা ভেদ করে মাঘের হাওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে গ্রামীণ ঐতিহ্যকে নতুন করে জাগিয়ে তুলতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সরোবর পার্ক এন্ড রিসোর্টে শুরু হয়েছে এক অনন্য পিঠা উৎসব। রঙিন পিঠা আর সাংস্কৃতিক আয়োজনের সঙ্গে ভরপুর এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ জীবনের গল্প বলা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সরোবর পার্ক এন্ড রিসোর্টে এ পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজির হোসেন।
জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম রেজা, সরোবর পার্কের স্বত্বাধিকারী আরেফিন আজিজ সরদার সিন্টু, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর মণ্ডল, গাইবান্ধা জেলা জিয়া মঞ্চের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান মুসাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনকালে ইউএনও মো. নাজির হোসেন বলেন, এই উৎসব গ্রামীণ ঐতিহ্যকে উদযাপন করার এক মহান উদ্যোগ। আমাদের সবার উচিত এসব ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করা। আশা করি, এই পিঠা উৎসব শুধু আনন্দই নয়, আমাদের শেকড় ও সংস্কৃতির প্রতি নতুন এক ভালোবাসা জাগাবে।
সরোবর পার্কের স্বত্বাধিকারী আরেফিন আজিজ সরদার সিন্টু বলেন, এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য হলো আমাদের হারানো গ্রামীণ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং তাদের মধ্যে সংস্কৃতির চর্চা বাড়ানো।
তিনি আরও বলেন, এই উৎসবের লক্ষ্য শুধু পিঠা প্রদর্শন নয়, বরং আমাদের হারানো ঐতিহ্যকে তুলে ধরা এবং আমাদের প্রজন্মকে গ্রামীণ সংস্কৃতির দিকে ফিরে তাকাতে উৎসাহিত করা। আশা করি, এই আয়োজন আগামী প্রজন্মের মধ্যে আরও গভীরভাবে ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসা জাগাবে।
উদ্বোধনী দিনে উৎসবস্থল ছিল এক আনন্দমুখর পরিবেশে ভরপুর। অতিথিরা উৎসবের বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন ধরনের গ্রামীণ পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন। পাটিসাপটা, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, দুধ পিঠা—এসব স্বাদের পিঠায় ভরপুর উৎসবস্থল। সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব গ্রামীণ পরিবেশে দর্শকরা যেন ফিরে পেলেন তাদের হারানো দিনগুলো।
উৎসবটি শুধু পিঠাপ্রেমীদের জন্য নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা। সন্ধ্যায় গ্রামীণ সঙ্গীত, নাচ, এবং বিভিন্ন শিল্পকলা পরিবেশনা করবে স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীরা।
আলোকসজ্জা, সঙ্গীতের মূর্ছনা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ সব মিলিয়ে উৎসবস্থল এক উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত দৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে। পিঠা, সংস্কৃতি, আর হাসিমুখে দর্শকরা—এখানে এক অনন্য মিলনমেলা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্যোক্তারা বলেন, এই উৎসব শুধু শীতের আমেজে আনন্দ খুঁজে পাওয়ার জন্য নয়, বরং আমাদের ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের মাঝে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করার একটি প্রচেষ্টা।
তাদের আশা, ভবিষ্যতে এই ধরনের আয়োজন গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সেতুবন্ধন আরও শক্তিশালী করবে।