শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২৭ অপরাহ্ন

বেনাপোল স্থলবন্দরের অভ্যন্তর এবং বাহিরে অনির্মাণ সামগ্রী’র স্তুপ: পণ্য রক্ষনাবেক্ষণে ব্যঘাত সৃষ্টি

রিপোর্টারের নাম : / ৫৪ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মনির হোসেন বেনাপোল প্রতিনিধি:দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য রাখার স্থানগুলো এবং বন্দরের বাহিরে পুরাতন বাউন্ডারী প্রাচীর ও পুরাতন ইমারতের অনির্মাণ সামগ্রী ভাঙ্গা ইট,ইটের খোঁয়া,পিলারের ভগ্নাংশ সহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনায় ভরে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা এ সকল অনির্মাণ সামগ্রী/ আবর্জনা বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য রক্ষনাবেক্ষণে ব্যঘাত সৃষ্টি করছে। পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের এই বেনাপোল বন্দর।

এ বিষয়ে বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান জানান, বন্দরে আমদানি পণ্যের মধ্যে বর্জ্য স্তুপ এবং অনির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকায় পন্য খালাসে দুর্ভোগ ও জায়গা সংকট তৈরী হচ্ছে। বার বার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর হলো বেনাপোল। সরকার এ বন্দর থেকে বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে থাকে। এত বড় বাণিজ্যিক স্থাপনায় বছরের পর বছর এই দুর্দশা চললেও সরকারেরর পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হচ্ছে না।

বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন(রেজিঃ-৯২৫)’র সাধারণ সম্পাদক-মো.সহিদ আলী বলেন,এ বন্দরে বছরে ২২ থেকে ২৪ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়। এসব পণ্য সংরক্ষণে রয়েছে ৩৩টি শেড ও তিনটি ওপেন ইয়ার্ড, একটি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড। কিন্ত ভগ্ন ইমারতের অনির্মাণ সামগ্রী ভাঙ্গা ইট,ইটের খোঁয়া,পিলারের ভগ্নাংশ সহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনায় ভরে উঠেছে বন্দরের ভিতরকার ঐ ইয়ার্ড সমূহ। সাপ-বিচ্চুর ভয়ে নির্ভয়ে কাজ করতে পারেনা কুলি(শ্রমিক) সদস্যরা। এ গুলো দ্রুত অপসারণ করা অতি জরুরী।

অপরদিকে,বন্দর সংলগ্নে এবং বেনাপোল চেকপোষ্ট সন্নিকটে আন্তর্জাতিক মানের নির্মিত বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনালের ভিতরকার অবস্থা একইরকম। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনালটি নির্মান করা হয়েছে পাসপোর্ট প্যাসেঞ্জারদের আনায়নকারী দুরপাল্লার বাস রাখার জন্য। অথচ সেখানে সাপ বিচ্ছুর বাসা এবং ঝোপ-ঝাড়ে ছেয়ে আছে টার্মিনালটি।

পোর্ট কর্তৃপক্ষ এটা দেখেও দেখেনা। ভগ্ন ইমারতের অনির্মাণ সামগ্রী ভাঙ্গা ইট,ইটের খোঁয়া,পিলারের ভগ্নাংশ সহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনায় ভরে উঠেছে সমগ্র বাস টার্মিনাল এরিয়া। যে কারনে রাজধানী ঢাকা কিংবা দেশের অন্যান্য স্থান থেকে ছেড়ে আসা দুরপাল্লার বাসগুলি টার্মিনাল অভ্যন্তরে না রেখে টার্মিনাল সংলগ্ন মহাসড়কে রাখতে বাধ্য হয়।

কয়েকটি পরিবহন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গাড়ী পার্কিং এর সময় ঐ সমস্ত বর্জ্যস্তুপের সাথে ধাক্কা খেয়ে কোটি টাকার গাড়ীর ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। দ্রুত বর্জ্য অপসারণ চান এ সকল পরিবহন মালিকরা।

উল্লেখ্য, স্মারক নং১৮.১৫.৪১৯০.০২৫.০৩.০০৮.২০২৪-৭০
তারিখ: ৩১-০৮-২০২৫ ইং,স্পট নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয় বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। দরপত্রে বলা হয়- বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন “বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বেনাপোল স্থলবন্দরের বাউন্ডারী ওয়ালের নির্মাণস্থল হতে বন্দর এলাকায় প্রাপ্ত পুরাতন নির্মাণসামগ্রী/মালামাল (যেখানে যে অবস্থায় আছে) স্পট নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের জন্য আগামী ০৪-০৯-২০২৫ খ্রি: তারিখ সকাল ১১.০০ টার সময় আর্ন্তজাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনের (২য় তলা) সম্মেলন কক্ষে স্পট নিলাম কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। উল্লিখিত তারিখ ও সময়ে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি’কে নিলামে অংশ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।

স্পট নিলামের পরবর্তী কার্যক্রম জানতে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো.শামীম হোসেনের স্মরনাপন্ন হলে,তাকে না পেয়ে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ পরিচালক(ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির এর সাথে কথা বলে জানা যায়,স্পট নিলামে অফিসিয়াল ভ্যালু(মূল্য) না আসায় স্পট নিলাম কমিটি’র প্রধান বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি জানালে,উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ “ওপেন টেন্ডার”(পত্রিকান্তরে) বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে উপ-পরিচালক রাশেদুল সজিব নাজির জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর