যমুনার চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বৃত্তি পেলো

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের চব্বিশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেড় শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তিসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত করেছে সামাজিক, সেবামূলক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ‘ইডুকেশন গ্রোয়ার এসোসিয়েশন। সোমবার (৯ জুন) উপজেলার চরাঞ্চলের নিশ্চিন্তপুর হাই স্কুল মাঠে আয়োজিত বৃত্তি পরীক্ষায় চরাঞ্চলের ২৪টি হাই স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক কর্মশালা ছিলো বিশেষ অংশ। এ ছাড়াও আলোচনা সভা, ফলাফল ঘোষণা এবং পুরস্কার বিতরণী শিক্ষার্থীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দিতে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার ফরিদুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার সুমন মিয়া, ডাক্তার মুস্তাফিজুর রহমান, সমাজসেবক আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল কাদের চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
‘টাচ দ্য ড্রিম’ স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজক সংস্থা ইডুকেশন গ্রোয়ার এসোসিয়েশন গত চার বছর ধরে এই আয়োজন করে আসছে। সংস্থাটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। তাদের মূলনীতির ভিত্তিতে, সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের মেধা উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ, আর্থিক সহায়তা এবং সামাজিক সচেতনতায় অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের মধ্যে ল্যাপটপ, প্রাইজ মানি এবং সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আয়োজকরা জানান, এক দিনে সহস্রাধিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা নেওয়া, মূল্যায়ন করা এবং অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে স্বেচ্ছাসেবীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে একটি প্রাণবন্ত ও স্মরণীয় আয়োজন সম্ভব হয়েছে।
মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “প্রথমবার কোনো বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিলাম। আগে কখনো ভাবিনি, এভাবে পরীক্ষার পর ফলাফলও ঘোষণা হবে, আবার পুরস্কারও পাওয়া যাবে। এত বড় আয়োজন আমাদের মতো গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।”
ইশিতা আক্তার বলেন, “পরীক্ষাটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু ভালো লেগেছে। এখানে এসে বুঝলাম, পড়াশোনার বাইরে কত কিছু শেখার আছে। বিশেষ করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারা যে আমাদের জন্য এত কিছু করে, সেটা দেখে ভালো লাগল। বড় হয়ে আমিও এভাবে কিছু করতে চাই।”
সংগঠনের সভাপতি মুদ্দাসির রহমান বলেন, “এই ধরনের আয়োজন গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় এবং উচ্চশিক্ষার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে অনুপ্রাণিত করে।”