শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত কোনাবাড়ীতে আবাসিক হোটেল থেকে ২ নারীসহ ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ ভুরুঙ্গামারীতে চর বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের দাবীতে মানববন্ধন ‎উপজেলা প্রকৌশলীদের উপর হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন কাজিপুরের লাইসিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ অনুষ্ঠিত  লালমনিরহাট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শ্যামল ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক! জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি নিয়ে দুপক্ষের  পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী কুড়িগ্রামে ‘’ফ্রেন্ডশিপ ডিসএবিলিটি প্রোগ্রাম’’ এর এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত কোনাবাড়িতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার-১ লফস’র আয়োজনে খেলার মাঠ,পার্ক ও উম্মুক্ত স্থানের বাজেট বরাদ্দ বিষয়ক আলোচনা সভা

রফতানি প্রণোদনার ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়

রিপোর্টারের নাম : / ৯৪ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের (ঢাকা-মাওয়া ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় অসংগতি ও ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যয়বহুল উচ্চমানের এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হলেও রাস্তার ধারে টানা গার্ড রেইল (নিরাপত্তা বেষ্টনী) দেয়া হয়নি। অবকাঠামোগত ঘাটতির কারণে গত ১৯ মার্চের বাস দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণহানি ও গুরুতর জখম হয়েছে। অন্যদিকে বিশৃঙ্খল ট্রাফিক অপারেশনের কারণেও এক্সপ্রেসওয়েটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষকরা।

গত ১৯ মার্চ মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় ইমাদ পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ২৬ জন  এ ঘটনা তদন্ত করেছে এআরআইয়ের একটি কারিগরি দল। গতকাল বুয়েটের কাউন্সিল ভবনে তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামছুল হক। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত গতি, চালকের ক্লান্তি ও তন্দ্রাচ্ছন্নতা, যান্ত্রিক ত্রুটি, চালকের অদক্ষতা বা বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ওই দুর্ঘটনা ঘটেনি। দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বাসটির টায়ার ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারানোকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাস্তার ওপর টায়ারের স্কিড মার্কের অনুপস্থিতি ইঙ্গিত করে যে দুর্ঘটনাটি আকস্মিকভাবে হয়েছিল, যা টায়ার ফেটে যাওয়ার কারণে হতে পারে। ব্রেকের ত্রুটির কারণে এটি ঘটেনি চালকের ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী চালকের বিশ্রাম নেয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। তাই চালকের ক্লান্তি এ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। স্পিড ট্র্যাকিং ডাটার ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, চালক অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাননি। দুর্ঘটনার সময় গাড়ি ঘণ্টায় ৭৯ কিলোমিটার গতিবেগে চলছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি কালভার্টের ঠিক আগে বাসটির পথচ্যুতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত বাসটি কালভার্টের কংক্রিটের উইং ওয়ালের ওপরের প্রান্তে ধাক্কা খায় ফলস্বরূপ বাসটির সামনে অংশ ভেঙে যায় এবং ভেতরের দিকে চেপে যায়। ড্রাইভার, সুপারভাইজার, হেলপার এবং সামনের সিটের যাত্রীদের সামনে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা না থাকায় ১৪ জনের তাত্ক্ষণিক মৃত্যু ঘটে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল না। যদি থাকত তবে বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ত না। কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কাও এড়ানো যেত সেক্ষেত্রে এত প্রাণহানি নাও হতে পারত।

তদন্ত প্রতিবেদনটি উপস্থাপনকালে এআরআইয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘আমরা যে রাস্তার কথা বলছিলাম, সে রাস্তাটা যদি দেখি, সবচেয়ে উন্নত মানের। সার্ভিস রোড আছে। কোনো মোড় নেই। ইন্টারসেকশন-ইন্টারচেঞ্জ আছে। এ রকম রাস্তা বাংলাদেশে প্রথম হয়েছে কিন্তু একটা এক্সপ্রেসওয়ে যেভাবে হওয়া দরকার ছিল, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এটা সেভাবে হয়নি। এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে।’

তদন্ত প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো যানবাহনে বিশেষত ভারী বাণিজ্যিক যানবাহনে ট্র্যাকিং ডিভাইস বাধ্যতামূলক করা, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সেফটি অডিট করা, পুরো করিডোরজুড়ে অবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া, ডিজিটাল ভ্যারিয়েবল সাইন-সিগন্যাল স্থাপন, ভবিষ্যতে কোনো হাইওয়ে বা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের আগে প্রি-সেফটি অডিট করা, আমদানি করা টায়ার ও টায়ার-সম্পর্কিত উপাদানের গুণমান পরীক্ষা করা ইত্যাদি।

২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে এ এক্সপ্রেসওয়েতে ২২২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দুর্ঘটনায় ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিদিন প্রায় একজনের মৃত্যু। এতেই বোঝা যায়, নিরাপদে চলাচল নিশ্চিত করার জন্য শুধু উচ্চমানের অত্যন্ত ব্যয়বহুল অবকাঠামো নির্মাণই যথেষ্ট নয়, এক্সপ্রেসওয়ের উপযুক্ত যানবাহন, যোগ্য চালক এবং নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল ট্রাফিক অপারেটিং ব্যবস্থা প্রয়োজন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর