বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার:ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ লালমনিরহাটে জুই হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ- পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি টেন্ডার বাক্স লুটের মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন লাইসেন্স ব্যতীত ভাটা পরিচালনা করায় কুড়িগ্রামের ৫টি ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন উল্লাপাড়ায় পানি নিষ্কাশনের দাবীতে রাস্তা অবরোধ করে মানববন্ধন আগামী ৭ দিনের মধ্যে হৃদয় এর লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তরের দাবি ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ দ্বিতীয় ধাপের আখেরী মোনাজাত শেষ,৫৯ তম বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা ইজতেমা ময়দানে চলছে হেদায়েতি বয়ান,আখেরী মোনাজাত দুপুর ১২ টায় ইজতেমায় আরও দুই মুসল্লীর মৃত্যু

রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার:ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ

রিপোর্টারের নাম : / ৭ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মনির হোসেন,বেনাপোল প্রতিনিধি :ফল আমদানিতে অতিরিক্ত সম্পুরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় দ্বিতীয় দিনের মত বাংলাদেশ ফ্রেস ফুটস ইমপোর্টস এ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোন ফলের ট্রাক ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি। এর আগে ২৯ জানুয়ারী বাংলাদেশ ফ্রেস ফুটস ইমপোর্ট এ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে আল্টিমেটাম দেয় সোমবারের (৩ ফেব্রয়ারী) মধ্যে বাড়তি শুল্ককর তুলে না নেওয়া হলে মঙ্গল ও বুধবার বার (৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারী) দেশের সব স্থলবন্দর, নৌবন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ থাকবে।

বাংলাদেশ ফ্রেস ফুটস ইমপোর্টস এ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি নূরউদ্দীন আহম্মেদ জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চাপিয়ে দেওয়া ১০ শতাংশ সম্পুরক শুল্ক তুলে না নেওয়ায় তারা ফল আমদানি বন্ধ রেখেছে। যদি আজকের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হয় পরবর্তীতে তারা বড় কর্মসুচীতে যাবেন।
ইতোমধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি কমে অর্ধেকেরও নীচে নেমে এসেছে। ফলে বড় ধরনের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে শুধুমাত্র ফল আমদানি থেকে প্রতিদিন ২৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হতো। সেটি বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছিল ৫ কোটিতে। গত দুই দিন ফল আমদানি বন্ধ থাকায় এ খাত থেকে সরকার কোন রাজস্ব পায়নি।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয়ের একটি বড় অংশ আসে ফল আমদানির খাত থেকে। আর মাত্র কয়েকদিন আছে পবিত্র রমজান। দেশে রমজান মাসে ফলের চাহিদা একটু বেশি থাকে। রমজানের আগে ফলের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক কর আরোপ করায় ব্যবসায়ীরা ফল আমদানি বন্ধের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি হতো। সেটি বর্তমানে ২০ থেকে ২২ ট্রাকে এসে দাঁড়িয়েছিল। দুই দিন বন্ধে এখন কোন ফলের ট্রাক আসেনি। এতে বন্দরে কর্মরত কয়েক‘শ শ্রমিক বেকার হয়েছে পড়েছে।

হঠাৎ করে গতমাসের ৯ জানুয়ারি আমদানি করা তাজা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করে সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে আমদানিকৃত ফলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে সকল প্রকার ফলের। যা সাধারন ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

আমদানি বন্ধে দুই দিনে কেজিতে সব ধরনের ফলের দাম আরো বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে খুচরা বাজারে এক কেজি আপেল প্রকার ভেদে ৩২০-৩৭০, মালটা কেজি ৩১০-৩৩০, কমলা ২৬০-৩১০ এবং আঙুর প্রকার ভেদে ৪৬০- ৫২০ টাকা, ডালিম ৪৭০-৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারত থেকে যে সকল খাদ্য দ্রব্য আমদানি হয় এর মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে আপেল, আঙুর, কমলা, মালটা ও আঙুরসহ বিভিন্ন প্রকারের তাজা ফল।

উচ্চ শুল্কের কারণে ব্যবসা আগের মতো ফল আমদানি করতে পারছে না। আসন্ন রমজানে ফল আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ককর প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছেন সাধারন ক্রেতারা।

বেনাপোল আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, ফল আমদানিতে সরকার হঠাৎ করে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। যার প্রভাব পড়েছে বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরের উপরে। যার কারনে আমদানি একদম শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এর ফলশ্রæতিতে ঢাকার বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী এ্যাসোসিয়েশন মঙ্গলবার থেকে ফল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।

ফল ক্রেতা রেজাউল ইসলাম বলেন, সরকার হঠাৎ করে ফল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছে। সে জন্য বাজারে ফলের দাম বেড়ে গিয়েছে। আসছে রমজান মাসে ফলের দাম আরও বেড়ে যাবে। দাম এভাবে বাড়তে থাকলে গরিব মানুষেরা ফল খেতে পারবে বলে মনে হয়না। ফলের বাজারে বড় ধরনের সংকট ও তৈরী হতে পারে।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের যুগ্ন কমিশনার সুশান্ত পাল জানান, গত কয়েক মাস ধরে ফলের আমদানি কমে গেছে। এর উপর সরকার আবার অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছে। আগে প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ৫০-৬০ ট্রাক ফল আমদানি হতো। মাত্র কয়েকদিনে তা অর্ধেকে নেমে আসে। বর্তমানে মঙ্গলবার সকাল থেকে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এভাবে চললে আগামী দিনে দাম বাড়ার পাশাপাশি ফলের সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর