শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন

সলঙ্গায় ভিজিডি’র চাল বিতরণে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৮৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিডব্লিওবি (ভিজিডি) ৫ মাসের চাল বিতরণ অনিয়ম ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।  এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন

সরকার থেকে দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় দুস্থ ও অসহায় মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি চালু করেন।

জানা যায়, সরকারের নিয়মানুযায়ী দুই বছর মেয়াদি (২৪) মাসে ভিজিডি কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের সময়সীমা গত ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, অন্তরবর্তী সরকারের এসে আর নতুন কোনো সুবিধাভোগীদের তালিকা না করায় জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিতরণ বন্ধ থাকে। পরবর্তিতে কার্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি করায় পূর্বের কার্ডধারীরা এক সাথে ৫ মাসের ১শ ৫০ কেজি চাল বরাদ্দ পায়। সে সকল কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে চাল দেবার কথা বলে প্রতিটি কার্ডধারীর কাছ থেকে ১১ শ টাকা করে ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যারা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটা ওর্য়াড থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করেন ইউপি সদস্যরা।

এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের দবিরগঞ্জ গ্রামের ভুক্তভোগি জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী আদুরী খাতুন,নজরুল ইসলামের স্ত্রী রেজেদা খাতুন ও জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সাথী খাতুন।

ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘদিন ভিজিডি কার্ডের চাল বন্ধ ছিল পরে চাল এসেছে। চাল নিতে হলে জন প্রতি ১১শ টাকা করে দাবিকরেন ইউপি সদস্য মোক্তার হোসেন। পরে আমরা ১১ শ টাকা দিয়ে ৫ মাসের চাল গ্রহন করি। পরে জানতে পারি অবৈধভাবে আমাদের কাছ থেকে ১১ শ টাকা করে নিয়েছেন। এজন্য  মঙ্গলবার বিকেলে  ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।

চৈত্রহাটি গ্রামের চাঁদ আলীর স্ত্রী ভুক্তভোগী মানিয়া খাতুন, মৃত কোরবান আলীর স্ত্রী পিনজিরা খাতুন বলেন, ভিজিডি কার্ডের চাল নিতে আমরাদের কাছ থেকে নায়েব আলী মেম্বর ১১শ টাকা করে নিয়েছেন। আমাদের ওর্য়াডের মেম্বর যদিও আকবর আলী কিন্তু টাকা নিয়েছেন নায়েব আলী মেম্বর। আমরা গরীব মানুষ অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার করে নিয়ে এসে দিয়ে চাল গ্রহন করেছি।

উনুখা গ্রামের কার্ডধারী সুবিধাভোগী হালিমা খাতুন জানান, দীর্ঘ কয়েক মাস ভিজিডি কার্ডের চাল বন্ধ ছিল। গত সোমবার (১৯ মে) চাল সংগ্রহ করি। পরে বিকেলে আমার স্বামীর কাছ থেকে আকবর আলী মেম্বর ১১শ টাকা নিয়েছে। অবৈধ ভাবে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে পরে জানতে পেরেছি। আমরা এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তিরা বলেন ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ছাইদুল  ইসলাম মোগল এর নির্দেশে প্রতিটি কার্ডধারীরা কাছ থেকে ১১শত করে টাকা উঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। আমরা দুর্নীতিবাজ প্রশাসকের অপসারণের দাবী করছি।

ইউপি সদস্য আকবর আলী বলেন, ভিজিডি কার্ডের চাল বিতরণের সময় কারোর কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা সংগ্রহ করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে হয়তো স্বরযন্ত্র করা হচ্ছে।

ইউপি সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) নওজেশ আলী ওরফে নায়েব আলী বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমাদের ইউনিয়নে ভিজিডি চাল বিতরণে কারোর কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা নেওয়া হয়নি। তার পরেও কেউ যদি কোন প্রকার টাকা নিয়ে করে থাকে খোঁজ নিয়ে জানানো হবে বলে ফোনের লাইন কেটেদেন।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ছাইদুল ইসলাম মোগল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন কোন ঘটনা যদি ঘটে থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমিকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর