সোশ্যাল মিডিয়া এখন এক বিপদের কারবার: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) এখন এক বিপদের কারবার। ঘরের ভেতরের বিষয়গুলো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে আসে। এ নিয়ে কিছু বললেই আবার রাইট টু ফ্রিডম (স্বাধীনতার অধিকার) নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিএনপিপন্থি ছয়জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানি হয়। ২৫ জুলাই আপিল বিভাগ বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে শুনানির জন্য ১ আগস্ট তারিখ রেখেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি ওঠে। আদালতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে ছয়জনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘লিখিত বক্তব্যে ক্ষমা তো চাননি। প্রয়োজন পড়লে আবার ক্ষমা চান। আপনারা তো নির্দেশনা (আদালত প্রাঙ্গণে সমাবেশ, মিছিল, র্যালি, মানববন্ধন ও ধর্মঘট না করতে হাইকোর্টের ২০০৫ সালের ২৩ মে দেওয়া আদেশ) মানছেন না।’ পরে আদালত ২২ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। সেদিন ছয় আইনজীবীকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়। আবেদনটি করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা। বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবী হলেন কায়সার কামাল, এজে মোহাম্মদ আলী, ফাহিমা নাসরিন, আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, রুহুল কুদ্দুস, মাহবুবুর রহমান খান ও গাজী কামরুল ইসলাম।
আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ নভেম্বর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে আদালত অবমাননার আবেদনে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সে বিষয়ে নিজেদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীকে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৯টায় আপিল বিভাগে (১ নম্বর কোর্টে) হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। নির্ধারিত তারিখে তারা আদালতে হাজির হয়েছিলেন। আগের ধারাবাহিকতায় ১২ জুন বিষয়টি আদালতে ওঠে। সাত আইনজীবীর মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী গত মে মাসে মারা যান। অপর ছয়জন আইনজীবী ১২ জুন আদালতে হাজির হন। সেদিন আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাপারে ছয় আইনজীবীকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি আদালতে তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর মৃত্যুবরণ করায় আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর নাম বাদ দেওয়া হয়।