রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০২ অপরাহ্ন

হত্যা মামলায় ৮দিন অতিবাহিত হলেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ-আসামী পক্ষের সংবাদ সম্মেলন!

রিপোর্টারের নাম : / ৯২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটে মেধাবী কলেজ পড়ুয়া শাহিনুর চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ৮ দিন পার হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মেধাবী কলেজ শিক্ষার্থী শাহিনুরের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসীর।

নিহত শাহিনুর ইসলাম (১৯) লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের চিনি পাড়া এলাকার কাশেম আলির ছেলে। তিনি পৌরসভার শেখ শফিউদ্দিন কমার্স কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র এবং পাশাপাশি ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি ছিলেন।

এর আগে কলেজছাত্র শাহিনুর ইসলামের চাঞ্চল্যকর এ হত্যা ঘটনার মূল হোতাদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে লালমনিরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মোড় (দক্ষিণ হাঁড়িভাঙ্গা) এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দ্রুত আইনের আওতায় এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানান বক্তারা।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুন রাত ৮টার দিকে ভিক্ষাবৃত্তি কাশেম আলির কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাহিনুর ইসলাম (১৯) বাজার থেকে বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে রাস্তায় বাইসাইকেলে সাইড নেয়ার জন্য কলিং বেল বাজানোকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ হাঁড়িভাঙ্গা চিনির দিঘিরপাড় এলাকার শুক্কুর ভাটিয়ার ছেলে অভিযুক্ত আসামি মোতালেব ও তার ছেলে দুলু এবং বেড়াতে আসা দুই মেয়ের জামাই মিজান এনামুল সহ শাহিনুর এর প্রতি চড়াও হয়ে বেধড়ক মারপিট করে আহত করে।

এসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আহত শাহিনুরকে উদ্ধার করে প্রথমে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। দীর্ঘ সাতদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে বুধবার (২৬ জুন) ভোরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাকালীন সময়ে শাহিনুর ইসলামের মৃত্যু হয়।

এবিষয়ে শাহিনুরের চাচা জসিমউদ্দিন বাদী হয়ে চার জনকে আসামী করে সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন। এজাহার ভুক্ত আসামীরা হলেন শুক্কুর ভাটিয়ার ছেলে মোতালেব মিয়া, দুলু মিয়া (২৫), আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মিজান মিয়া (৩০), গাইবান্ধা জেলার এনামুল হক (৩৫)।

নিহত শাহিনুরের মা শাহিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে কে আমি ভিক্ষা করে খাইয়ে মানুষ করেছি। তাকে কষ্ট করে আই এ (এইস এসসি) পড়ালাম যেন আমার ভাগ্যের পরির্বতন হয়, কিন্তু তারা আমার ছেলেকে রাস্তায় মেরে চোখ নষ্ট করে দিয়েছিলো, বুকে মারে, জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে ফেলে এবং গলা টিপে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

এলাকাবাসী জসীম বলেন, শাহীনুরদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। তার বাবা কাশেম আলী পেশায় একজন ভিক্ষুক। তিনি এখনও ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তারা অন্যের বাড়ীতে একটি খামার ঘরে থাকে। এ দিকে আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শহরের মিশন মোড় এলাকার ফ্রুটভলি নামের একটি রেস্টুরেন্টে আসামীদের আত্নীয় স্বজনেরা নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আসামীদের স্বজন আইরিন আক্তার আখি, লিখিত বক্তব্য বলেন, শাহিনুরকে কে বা কাহারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নির্দোষ পথযাত্রীদের উপর দায় চাপানোর প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত হত্যাকারীদের সনাক্ত করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, নিখুঁত ভাবে তদন্ত করলে আসল অপরাধী বেড়ীয়ে আসবে এবং অসহায় নির্দোষ মানুষগুলো বেঁচে যাবে।

এ বিষয় লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এটি একটি হত্য মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, আসামীরা পালাতক রয়েছে এবং গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর