রাত পোহালেই গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন, বাজেট কোটি টাকার উপরে। গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক  এ সম্মেলন  দীর্ঘ ১৯ বছর পর হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় গাজীপুর রাজবাড়ি মাঠে এ সম্মেলনকে সফল করতে  সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা আওয়ামীলীগ।

অনেক বছর পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বেনার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো নগর। গুরুত্বপূর্ণ পদের আশায় একাধিক পদে দৌড়ঝাঁপ পাড়ছে আওমীলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। দেশকে সমৃদ্ধ ও আওয়ামীলীগের প্রতি যারাই নিবেদিত তাদের মূল্যায়ন করে নতুন কমিটি গঠনের  প্রত্যাশা করছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা। সম্মেলন সুষ্ঠ ও সুন্দর করতে মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবে বলে জানায় পুলিশ।

গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধ। ইতোমধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতির সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১৯ মে’র এ সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি হবে তা নেতা-কর্মীদেরকে আরো ঐক্যবদ্ধ করবে এবং গতিশীল করবে।

ইতোপূর্বে ২০০৩ সালের ২৯ জুন একই স্থলে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সম্মেলনে বর্তমান মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক ও অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। ১৯ বছর পর আবার ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১৩ বছর পর ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর সম্মেলন ছাড়াই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে পুনরায় সভাপতি এবং ইকবাল হোসেন সবুজকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করে। পরে ২০১৭ সালের ২২ জুলাই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হয়। এরপর আর সম্মেলন হয়নি।

গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এবং সম্মেলনের মঞ্চ ও সজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ১৪মে থেকে গাজীপুরে ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য প্যান্ডেল ও মঞ্চতৈরিসহ আনুসাঙ্গিক কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকার সাউন্ড ফেয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে এসব নির্মাণ করার কাজ দেয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে ৫০০ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০০ফুট প্রস্থের ওয়াটার প্রুফ টেন্ট (প্যান্ডেল) থাকছে ২৫হাজার লোকের (ডেলিগেট) আসন ব্যবস্থা। ২৫হাজার ডেলিগের জন্য বিভিন্ন হোটেলে ২৫হাজার প্যাকেট তৈরি মোরগ-পোলাও এবং পানীয়ও থাকবে। থাকছে ৬০ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬০ফুট প্রস্থের  গ্লাস স্টেজ। এ স্টেজে ২৩০টি চেয়ার ছাড়াও স্টেজের সামনে ১০০টি ভিআইপি সোফা, তার পেছনে থাকবে চায়না চেয়ার। ফ্লাইং সাউন্ড সিস্টেম, ৫০টি এইচডি সিসি ক্যামেরা, অনলাইন লাইভ রেকর্ডিং করার জন্য থাকছে আরো চারটি ভিডিও ক্যামেরা।

সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৩৫০ কেভি’র স্যান্ডবাই জেনারেটর। ভ্রাম্যান আটটি টয়লেট ছাড়াও পর্যাপ্ত সংখ্যক পানির ট্রলি থাকবে। সেখানে প্রতিদিন ১০০জন শ্রমিক কাজ করছেন। অনুষ্ঠান চলাকালে ১৫০জন স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে। মূল স্টেজের সামনে ১২ফুট বাই ১২ফুটের আরো একটি স্টেজ নির্মাণ করা হয়েছে। যেখান থেকে গাজীপুরের কৃষ্টি ও কালচার নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ’থিম সং’ পরিবেশন করা হবে এবং অতিথিদের বরণীয় গান পরিবেশন করা হবে। সাউন্ড ফেয়ার’র স্বত্তাধিকারী সাহানুর ইসলাম শিবলী জানান, এ সম্মেলনে নির্মিত ওয়াটার প্রুফ টেন্ট, স্টেজ, লাইটিং, লাইভকরণ ও সাউন্ড সিস্টেম, চেয়ার-সোফা সরবরাহসহ আনুসাঙ্গিক কাজের জন্য তাদের ৩৩লাখ টাকার চুক্তি হয়েছে।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘদিন পরে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন হচ্ছে।

জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের পর এবার এটি হলো জেলা আওয়ামীলীগের প্রথম সম্মেলন। আশা করা হচ্ছে সকল নেতা-কর্মীরা এ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং এ সম্মেলন থেকে আগামি দিনে আওয়ামীলীগের কি ধরণের দায়িত্ব-কর্তব্য সে সম্পর্কে তারা দিক-নির্দেশনা পাবে। এটা আমাদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। তিনি বলেন, এ সম্মেলনের সকল খরচ জেলার দলীয় নেতা-কর্মীরাই যোগান দিচ্ছেন।