শিরোনামঃ
নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে সরকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা আড়াই মাসে টিআইএনধারী বেড়েছে ২ লাখ সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে কক্সবাজার প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনতে প্রচেষ্টা আছে সরকারের: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নতুন ১১ জেলা যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্কে আসছে পড়াশোনার শিক্ষা চ্যানেল এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন নয়: গণপূর্তমন্ত্রী পাহাড়ে শেখ হাসিনার আমলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী রংপুর মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে হিন্দু যুবকদের উদ্যোগে পার্থ সারথী বিদ্যাপিঠ গীতা স্কুল সিরাজগঞ্জে ২টি ব্রীজের শুভ উদ্বোধন করলেন এমপি ড. জান্নাত আরা হেনরী সিরাজগঞ্জে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্লাবের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জে দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট হাসপাতালে যোগদান করেননি কেএনএফ প্রধান নাথান বমের স্ত্রী পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ প্রচন্ড গরমে অর্ধেকে নেমেছে বেনাপোল বন্দরে পণ্য লোড-আনলোড জিআই সনদ পেল টাঙ্গাইল শাড়িসহ আরো ১৪ পণ্য

পোড়া রোগীর চিকিৎসায় চালু হচ্ছে স্কিন ব্যাংক

কলমের বার্তা / ১৩৬ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

কেউ দগ্ধ হলে ক্ষতস্থান দিয়ে শরীর থেকে পানি, লবণ, প্রোটিন ও তাপ দ্রুত বের হয়ে যায়। এতে মৃত্যুঝুঁকিও বাড়তে থাকে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ চামড়া দিয়ে ঢেকে দিতে পারলে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কমে আসে। কিন্তু দেশে ‘স্কিন ব্যাংক’ বা চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে পোড়া রোগীর মৃত্যুর হারও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে দেশে প্রথমবারের মতো চালু করা হচ্ছে স্কিন ব্যাংক।

পোড়া রোগীদের অত্যাধুনিক চিকিৎসায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অধীনে এই স্কিন ব্যাংক চালু হচ্ছে। এরই মধ্যে ল্যাবের যন্ত্রপাতিও স্থাপন শুরু হয়েছে। কোনো ব্যক্তি তাঁর মৃত্যুর আগে চাইলেই ওই স্কিন ব্যাংকে তাঁর চামড়া দান করে যেতে পারবেন। যেভাবে মরণোত্তর চোখ ও দেহ দান করেন, একইভাবে মরণোত্তর চামড়াও দান করা যাবে সেখানে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন গতকাল বুধবার বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো স্কিন ব্যাংক চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করে আনা হয়েছে। শিগগিরই এই স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরু হবে।

পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় দেশের বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক বলেন, যে কোনো ধরনের পোড়া রোগীর চিকিৎসায় চামড়া প্রতিস্থাপন জরুরি। কিন্তু দেশে তা না থাকায় দগ্ধদের মৃত্যুহার বেশি। সাধারণত শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেলেও মৃত্যুঝুঁকি থাকে। কিন্তু স্কিন ব্যাংক থাকলে সেখান থেকে সংরক্ষিত চামড়া নিয়ে দ্রুত রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা গেলে শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রোগীকেও বাঁচানো সম্ভব।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত মৃত্যুর ৬ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে এবং সঠিক তাপমাত্রায় লাশ সংরক্ষণ করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চামড়া সংগ্রহ করা যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে মৃত ব্যক্তির পিঠ ও পা থেকে চামড়া নেওয়া হয়, যাতে সহজে কারও চোখে তা না পড়ে। স্কিন ব্যাংক চালু হলে কেউ মরণোত্তর চামড়া দান করতে চাইলে নীতিমালা অনুযায়ী নাম তালিকাভুক্ত করতে হয়।

ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, তাঁরা এখন সাধারণত দগ্ধ রোগীর শরীর থেকেই চামড়া নিয়ে তা ক্ষতস্থানে প্রতিস্থাপন করেন। আইন না থাকায় রোগীর স্বজনের কাছ থেকেও তা নেওয়া সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির শরীর যদি ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়, তখন দেহের অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ থেকে চামড়া নিয়ে ক্ষতস্থান বড় হলে সেখানে প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। তা ছাড়া রোগীর শরীরের অন্যান্য অবস্থাও বিবেচনায় নিতে হয় তখন। এ জন্যই স্কিন ব্যাংক দরকার এবং সেটা করার উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।

এই চিকিৎসক বলেন, স্কিন ব্যাংকের কার্যক্রম চালাতে মানুষকে সচেতন হতে হবে। মরণোত্তর চামড়া দান করতে মানুষ এগিয়ে এলেই অনেক পোড়া রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।

বার্ন ইনস্টিটিউটের অপর এক চিকিৎসক বলেন, মরণোত্তর চামড়া দানের ক্ষেত্রে ধর্মীয়ভাবে সচেতন হতে হবে এবং সব ধর্মের নেতাদের বিষয়টি বোঝাতে হবে। কারণ, কেউ মরণোত্তর চামড়া দান করলে দাফন-কাফন বা সৎকারের সময় বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এ জন্যই বিষয়টি ধর্মীয় নেতাদের মানবিকভাবে বিবেচনা করতে হবে। তাঁরা এগিয়ে এলে বিষয়টি সহজ হয়। তবে স্কিন ব্যাংকের যাত্রায় বড় বাধা এ-সংক্রান্ত সুস্পষ্ট আইনের অভাব। আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, যদিও আইনি বিষয়টি দেখার জন্য তাঁরা এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন।

অ্যাসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অ্যাডভোকেট নিনা গোস্বামী গতকাল বলেন, স্কিন ব্যাংক চালু করতে আইন বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। ১৯৯৯ সালের মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বলতে কিডনি, যকৃতসহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নির্দিষ্ট করা আছে। ওই আইন যুগোপযোগী করে চামড়াকেও অন্তর্ভুক্ত করা হলে সব বাধা দূর হয়ে যাবে। শুধু প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা, মৃত্যুর আগেই চামড়া দানে ব্যক্তিগত সদিচ্ছা এবং সংশ্নিষ্ট ব্যক্তির পরিবারের সহায়তা।

তিনি বলেন, এ ধরনের ব্যাংক যাত্রা শুরু করলে দেশের অনেক সচেতন নাগরিকই প্রস্তুত আছেন মরণোত্তর চামড়া দান করতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৩৯ সালের দিকে প্রথম চামড়া সংরক্ষণ শুরু হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন স্কিন ব্যাংক রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে দেড় দশক আগে স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়।

84


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর