মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ভূরুঙ্গামারীতে ৩ ইটভাটার ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা সুন্দরগঞ্জে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড! গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় আওয়ামিলীগ নেতা গ্রেফতার কুড়িগ্রামে বিএনপির ৯টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা দীর্ঘ ৭ বছর পর বাংলাদেশি স্বামী-স্ত্রীকে ফেরত দিল ভারত লালমনিরহাটে ক্লিনিকের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ভেসে উঠলো “জয় বাংলা ছাত্রলীগ আবার ফিরবে উল্লাপাড়ায় হাত-পা বাঁধা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার কোনবাড়ীতে ইয়াবাসহ যুবক আটক জিসিসির ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন কোনাবাড়ীতে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালন

ঈদে রেকর্ড রেমিট্যান্স,৭ দিনে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা

রিপোর্টারের নাম : / ১৩১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২

ঈদের আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহে ঢল নেমেছিল। ঈদের ছুটির আগে সাত দিনেই ৯০ কোটি ৯৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারের বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা) টাকার অঙ্কে সাত দিনের এই রেমিট্যান্সের পরিমাণ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। গড় হিসাবে প্রতিদিন এসেছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক সপ্তাহে এত রেমিট্যান্স দেশে আসেনি।

আর প্রবাসী আয়ের এই জোয়ারের কারণে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামার যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা নামেনি। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পরও রিজার্ভও ৪০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে অবস্থান করছে।

বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যাংকগুলো আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারের দরের চেয়েও বেশি দামে রেমিট্যান্স দেশে আনছে। কোনো কোনো ব্যাংক ৯৫/৯৬ টাকায় প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দেশে আনছে।

এ হিসাবে টাকার অঙ্কে এই সাত দিনে রেমিট্যান্সের পরিমাণ আরও বেশি বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। রেমিট্যান্সপ্রবাহে নিম্নমুখী ধারায় শেষ হয় ২০২১-২২ অর্থবছর। ৩০ জুন শেষ হওয়া এই অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম।

২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ১০ জুলাই দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়। সেই উৎসবকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশুসহ প্রয়োজনীয় অন্য কেনাকাটা করতে অন্যান্যবারের মতো এবারও পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সে কারণেই রেমিট্যান্সে উল্লম্ফন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘এই সময়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির খুবই দরকার ছিল। নানা পদক্ষেপের কারণে আমদানি ব্যয় কমতে শুরু করেছে। রপ্তানির পাশাপাশি রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে আশা করছি এখন মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’

ঈদের ছুটির আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছয় দিনের (১ থেকে ৬ জুলাই) রেমিট্যান্সের তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তাতে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম ছয় দিনে ৭৪ কোটি ১০ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর মধ্যে প্রথম পাঁচ দিনে (১ থেকে ৫ জুলাই) এসেছিল ৫৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ৬ জুলাই এসেছিল ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

ঈদের ছুটির পর সোমবার চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের রেমিট্যান্সের তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যাচ্ছে, ১ থেকে ৭ জুলাই মোট ৯০ কোটি ৯৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ হিসাবে ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস ৭ জুলাই এসেছিল ১৬ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।

এর আগে কোনো ঈদের আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে এমন উল্লম্ফন দেখা যায়নি। আর রেমিট্যান্সের এই উল্লম্ফনের কারণে আকুর মে-জুন মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসার যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা আর নামেনি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার আকুর আমদানি বিল একটু কম এসেছে, ১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। ৭ জুলাই এই বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তখন রিজার্ভ বেশ খানিকটা কমে আসে। তবে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামেনি।’

ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস সোমবার দিনের শুরুতে রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে ওপরেই অবস্থান করছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। আমদানি ব্যয় বাড়ায় গত ৯ মে আকুর মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের রেকর্ড ২ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এরপর সপ্তাহ খানেক রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে অবস্থান করে।

রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় কয়েক দিন পর অবশ্য তা ৪২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। বাজারে ডলারের সংকট দেখা দেয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে প্রচুর ডলার বিক্রি করায় সেই রিজার্ভ ফের ৪২ ডলারের নিচে নেমে আসে; একপর্যায়ে তা ৪১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল।

এর আগের মেয়াদে অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদে আকুর ২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল শোধ করা হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল- প্রতি মাসে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে দেশে। এ হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

গত বছরের ২৪ আগস্ট এই রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। তখন ওই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেত। তখন অবশ্য প্রতি মাসে ৪ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হতো।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর