গোমস্তাপুরে বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজ-হলুদের সমারোহ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে সবুজ হলুদের সমারোহ। রোদ আর হিমেল বাতাসে উপজেলার মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ। কৃষি বিভাগ বলছে উপজেলার মাঠে প্রায় ৫০ শতাংশ ধান সবুজ বর্ণ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে, আর কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষকেরা মাঠের ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবে। তাই বারো ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন গোমস্তাপুরের কৃষকেরা।
এদিকে ধান কাটার আগের মূহূর্তে ধানের শীষ পরিচর্যা করতে ব্যস্ত উপজেলার অনেক কৃষক। কে কার আগে ফসল কাটতে পারে এটি একটি তার অন্যতম কারণ। উপজেলা রাধানগর, বাঙ্গাবাড়ী, বোয়ালিয়া ও রহনপুরসহ ১টি পৌর এলাকা ও ৮টি ইউনিয়নের মাঠে বিভিন্ন ধরনের ধান চাষ হয়েছে। তার মধ্যে জিরা, ব্রি-৩৬ জাতের ধানের চারা কৃষকেরা এ বছর বেশি আবাদ করেছে বলে জানায় উপজেলা কৃষি অফিস।
বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের আনারপুর গ্রামের কৃষক আহসান হাবীব বলেন, আমাদের মাঠে অধিকাংশ ধান পাকতে শুরু করেছে। এই ধান দেখে ফলন ভালো হবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। আর কয়েকদিন যদি ভালো রোদ হয়, তা হলে কয়েকদিনের মধ্যে আমরা ফসল ঘরে তুলতে পারবো।
রাধানগর ইউনিয়নের বেগপুর গ্রামের কৃষক মামুন মিঞা বলেন, আমাদের মাঠে অন্যান্য মাঠের চেয়ে একটু নিচু তাই আমরা সবার আগে ধান লাগাই, আবার সবার আগেই ধান কাটি। আমাদের মাঠের ধান এক সপ্তাহের মধ্যে অনেকেই টাকা শুরু করবে।
পার্বতীপুর ইউনিয়নের জিনারপুর গ্রামের নাজমুল হকসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, আমরা জমি থেকে সরিষা মাড়াই করে তারপর জিরা জাতের ধান রোপর করেছি, এবার সার সেচ সময় মতো পাওয়াতে ধানের শীষ ও ভালো হয়েছে। এ বছর আমরা ভালো ফলন পাবো বলে আশা করছি।
বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কালোপুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী জানান, আমি এ বছর ১০ বিঘা হাইব্রিড জাতের ধান লাগিয়েছি, আমার ধান অনেক ভালো হয়েছে, কিন্তু সামনে আসছে কালবৈশাখী ঝড় এই ঝড়ে যদি কোন ক্ষতি না হয়, তা হলে আমি বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ৩০ মন করে ধান পাবো বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার জানান, চলতি বছরে ধানের কোনো রোগবালাই নেই বললেই চলে। উপজেলা সকল ইউনিয়নের ধান পাকতে শুরু করেছে। তার মধ্যে রাধানগর ইউনিয়নের মাঠের ধান সবার আগে টাকা শুরু হবে। কারণ এর অধিকাংশ জমি বিলে ও নিচু এলাকার। চলতি বছরে উপজেলায় বোরো ধানের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ধান-১০০, ব্রি ধান-৮১, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৩৬ ও জিরাসহ অনেক জাতের ধান কৃষকেরা আবাদ করেছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৫ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ হাজার ১১০ মেট্রিকটন। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।
তিনি আরো জানান, উপজেলায় এ বছর সার ও সেচ কৃষকেরা যথা সময়ে পেয়েছে, সার ও সেচের কোনো সংকট ছিল না। এবার বড়ো ধরনের ঝড় বা বৃষ্টি না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ও কৃষি অফিস থেকে সর্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার হচ্ছে।