মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ভূরুঙ্গামারীতে ৩ ইটভাটার ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা সুন্দরগঞ্জে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড! গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় আওয়ামিলীগ নেতা গ্রেফতার কুড়িগ্রামে বিএনপির ৯টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা দীর্ঘ ৭ বছর পর বাংলাদেশি স্বামী-স্ত্রীকে ফেরত দিল ভারত লালমনিরহাটে ক্লিনিকের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ভেসে উঠলো “জয় বাংলা ছাত্রলীগ আবার ফিরবে উল্লাপাড়ায় হাত-পা বাঁধা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার কোনবাড়ীতে ইয়াবাসহ যুবক আটক জিসিসির ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন কোনাবাড়ীতে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালন

ঢেলে সাজানো হচ্ছে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা

রিপোর্টারের নাম : / ৪২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ১৫ জুন, ২০২৪

সামাজিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে রাজস্ব আহরণ কৌশল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাজস্ব আদায় ও আহরণসংক্রান্ত নীতি-কৌশল গুরুত্বপূর্ণ। আগামী তিন অর্থবছরে ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এ সময়ে রাজস্ব আহরণে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ সমাধান করে মধ্যমেয়াদে রাজস্ব আয় বাড়াতে পুরো ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাচ্ছে সরকার। মূলত বাজেট ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি ও ঋণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চায় সরকার। বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যয় নির্ধারণসহ সার্বিক নীতি প্রণয়নে রাজস্ব আদায়ের সক্ষমতা মূল বিবেচ্য রাখা হয়েছে।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ২০২৪-২৫, ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে চায় সরকার। এ অর্থের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের করা মধ্যমেয়াদি রাজস্ব পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, এনবিআরকে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এ অর্থবছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৭০ হাজার কোটি টাকা বেশি। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বড় অংশ আসবে বিভিন্ন কর-খাত থেকে।

এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে এবং কর প্রদান সহজ করলে অনেক কোম্পানি ও ব্যক্তি করদাতা কর প্রদানে উৎসাহিত হবে। ভবিষ্যতে রাজস্বের বড় অংশ আসবে প্রত্যক্ষ কর থেকে। কর-জাল বিস্তৃতকরণ ও রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্তমানে ব্যাপক কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কর অব্যাহতির এ হার যৌক্তিকীকরণ এবং বাজেট প্রণয়নে আরও স্বচ্ছতা আনতে পদক্ষেপ নেবে সরকার।

রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য সরকার বেশকিছু সংস্কার পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে রাজস্ব এবং করদাতার সংখ্যা বাড়বে। অর্থ বিভাগের প্রক্ষেপণ অনুসারে ২০২৬-২৭ অর্থবছর শেষে রাজস্ব জিডিপি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে।

অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদে রাজস্ব পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব আদায় বেগবান করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে মধ্যমেয়াদি রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জন করা সম্ভব। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রাজস্ব সংগ্রহের চেয়ে ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। মধ্যমেয়াদি প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২৪-২৫ হতে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে মোট রাজস্বের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ১৩ শতাংশ। এভাবে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি তথা কর-জিডিপির অনুপাত কাক্সিক্ষত পর্যায়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে কর-নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় মধ্যমেয়াদে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার সাধনের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসনকে আরও দক্ষ ও কার্যকর করতে সচেষ্ট সরকার। কর নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল ও কর প্রদান ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, সহজ ও কর-বান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়া কর অব্যাহতি সুবিধা আরও বিশ্লেষণ করে এর যৌক্তিকতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদে রাজস্ব পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে, কর-ব্যবস্থার সংস্কারের পাশাপাশি কর-বহির্ভূত রাজস্ব খাত থেকে আয় বৃদ্ধির বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করতেও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদে রাজস্ব পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়, রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর জন্য কী কী উদ্যোগ নেওয়া আবশ্যক, তা নির্ধারণ করার লক্ষ্যে বর্তমানে রাজস্ব আহরণ কম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে। কাক্সিক্ষত পরিমাণের চেয়ে অনেক কম রাজস্ব আহরণের পেছনে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো, অনেক বড় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত, কর অব্যাহতি, কাঠামোগত দুর্বলতা, জটিল কর ব্যবস্থাপনা ও তথ্য বৈষম্য এবং কর প্রদানে অনীহার সংস্কৃতি প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। বেসরকারি অংশীজনদের সহায়তা নিয়ে সরকার কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করা, কর আইন সহজবোধ্য করা ও কর অব্যাহতি যৌক্তিকভাবে প্রদান বিষয়ে নিবিষ্টভাবে কাজ করছে। রাজস্ব প্রশাসনে ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশনের ব্যাপ্তি বৃদ্ধি, কর আদায়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছ কর ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা এবং প্রগ্রেসিভ কর ব্যবস্থা; যেখানে ধনীলোক বেশি কর দেবেন- এসবের ওপর গুরুত্বারোপ করা হলে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম আরও সফল হবে। রাজস্ব খাতে চলমান ও প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচিসমূহ অভ্যন্তরীণ আহরণ বাড়াতে এবং মধ্যমেয়াদে রাজস্ব লক্ষ্যসমূহ অর্জনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, রাজস্ব প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নানা ধরনের সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে এবং বেশকিছু সংস্কার অব্যাহত রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর