ঠাকুরগাঁওয়ে সুপারি চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

ঠাকুরগাঁওয়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সুপারি গাছ। বিগত কয়েক বছর যাবত এই জেলায় ব্যাপক পরিমানে সুপারির গাছ চাষ করা হচ্ছে। এর চাষে লাভবান হতে পারায় কৃষকরা আরো বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন চাষি।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার উপজেলাগুলোর প্রায় সবগুলো গ্রামেই কম বেশি সুপারির গাছ চাষ করা হচ্ছে। কৃষকরা বাড়ির আঙিনায় ও পতিত জমিতে সারি সারি সুপারি গাছ লাগিয়েছেন। এই অঞ্চলের কৃষকরা আলু করলা সব ধরনের সবজির চাষের পাশাপাশি মিশ্র চাষ হিসেবে সাথে সুপারিরও চাষ করছেন। বছরের
চৈত্র-বৈশাখ মাসে কৃষকরা সুপারি সংগ্রহ করতে পারেন। এখানকার উৎপাদিত সুপারির বেশ চাহিদা রয়েছে। ফলে কৃষকরা বাজারে বেশ ভাল দামে বিক্রি করতে পারেন। উৎপাদিত সুপারি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করা যাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছরের উৎপাদন, এই অঞ্চলের সুপারির গাছ আকার ও স্বাদের কারণে দিন দিন কদর বাড়ছে। এখানকার তরুণদের মধ্যে অনেকেই সুপারি চাষে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন আবার অনেকেই ক্ষুদ্রভাবে এর ব্যবসা শুরেু করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা উপজেলার পাইকাররা এখান থেকে সুপারি গাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁও খড়িবাড়ি এলাকার আবু সায়েদ রনি বার্তা বিচিত্রা কে বলেন, আমার ৩০০টি সুপারি গাছ রয়েছে। এর চাষে তেমন খরচ নেই। আর খুব অল্প পরির্যাতেই ভাল ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বছরের মতো এবছরও ভাল ফলন পেয়েছি। এই গাছ গুলো থেকে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করতে পারব।
স্থানীয় মনছুরা আক্তার বলেন, আমার বাড়ির পাশে ২০-২৫টি গাছ রয়েছে। সুপারি বিক্রি করে বছরে বেশ ভাল টাকা আয় করতে পারি। এতে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচ হয়ে যায়। আমি আরো চারা লাগানোর পরিকল্পনা করছি।
সুপারি ব্যবসায়ী রাজু ও রবিউল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলের সুপারির বেশ চাহিদা থাকায় যশোর, ঢাকা, কুমিল্লা, সৈয়দপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা সুপারি কিনতে আসেন। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এর চাষে খরচ কম হওয়ায় কৃষকের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সুত্রে জানতে পারি চলতি বছর ঠাকুরগাঁএ জেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। বছরে এ জেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকা সুপারি বেচাকেনা হতে পারে। ফলে সুপারি জেলা ও দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভুমিকা পালন করছে। সুপারির আবাদ বৃদ্ধিতে আমরা কৃষকদেরকে উৎসাহিত করছি।