রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কারামুক্ত হলেন সা’দ পন্থী আলেম মুফতি জিয়া বিন কাশেম সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় হত্যার চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার কোনাবাড়ীতে বিভিন্ন দাবি নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, কর্মবিরতী সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় এরান্দহ পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু শ্রমিকের আত্মহত্যা কারখানা কর্তৃপক্ষের শোক দুই কর্মকর্তা অব্যাহতি ডা. শফিকুর রহমান যারা দেশকে ভালবাসে তারা কখনও দেশ ছেড়ে পালায় না! যশোরে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে কলেজ ছাত্র আটক ভাঙ্গুড়ায় ৯ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার উল্লাপাড়ায় ট্রাক ও মাইক্রোবাস সংর্ঘষে নিহত ২ জন আহত ১ চরবাসীর দুঃখ ঘোচাতে অনবদ্য ছুটে চলছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা

নির্মল নিমছায়া আর বকুল, বেলী, গন্ধরাজ ঘ্রাণে বেড়ে উঠুক আগামী প্রজন্ম -সুখময় সরকার

রিপোর্টারের নাম : / ১০৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শিক্ষা এবং বৃক্ষ রোপণ দুটি সেরা বিনিয়োগ যা একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য করা

যেতে পারে, তাই দুটিকে একত্রিত করা এবং বিদ্যালয়ে গাছ লাগানোর চেয়ে ভাল উদ্যোগ
আর কী হতে পারে? বিদ্যালয়, উদ্যান এবং বাড়িতে গাছ-গাছালির উপস্থিতি শিশুদের
বিকাশ, শেখা ও ফোকাস করতে সহায়তা করে এবং মনোযোগ ঘাটতি এবং
হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার এর লক্ষণগুলি কমাতে পারে। সবুজ পরিবেশ
বিদ্যালয়ের কর্মক্ষমতা উন্নত করতে পারে। গাছ আমাদের বাড়ি, গ্রাম, বিদ্যালয়
এবং সম্প্রদায়ের পরিবেশগত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সুবিধার একটি সম্পদ
প্রদান করে। গাছ ও বন বায়ু এবং জলের গুণমান মান উন্নত করে, কার্বন ডাই
অক্সাইডকে আলাদা করে, ঝড়, বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ কমায়, আমাদের
চারপাশকে ছায়া দেয় এবং শীতল করে, অক্সিজেন তৈরি করে, বন্যপ্রাণীদের জন্য
বাসস্থান সরবরাহ করে, সম্পত্তির মান বৃদ্ধি করে এবং মানুষের শারীরিক ও মানসিক
স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
শিশু ও যুবকদের প্রকৃতির সাথে বিশেষ করে গাছ ও বনের সংযোগ থেকে সবচেয়ে বেশি
লাভ হয়। ইলিনয় ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গেছে যে অল্পবয়সী মেয়েরা যারা সবুজ
পরিবেশে বড় হয়েছে তারা ভাল ফলাফল দেখিয়েছে, কম আবেগপ্রবণ আচরণ প্রদর্শন
করেছে, উচ্চতর স্ব-শৃঙ্খলা ছিল এবং সহকর্মীদের চাপ সামলাতে সক্ষম হয়েছিল।
স্কুলে প্রকৃতির দৃষ্টিভঙ্গি সহ মধ্য-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুর্ব্যবহার,
বন্ধুত্বহীনতার অনুভূতি এবং অনুপস্থিতির হ্রাস দেখিয়েছে। পাবলিক হাই স্কুলের
ছাত্রদের উপর করা একটি সমীক্ষায় প্রকৃতির দৃষ্টিভঙ্গি থাকাকালীন ছাত্রদের
আচরণ এবং কর্মক্ষমতায় ধারাবাহিক উন্নতি পাওয়া গেছে। প্রকৃতির উপস্থিতি
(এমনকি শুধু দৃশ্য) ছাত্রদের মানসিক ক্লান্তি এবং চাপ থেকে পুনরুদ্ধার করতে
সহায়তা করে।

শিক্ষার্থীরা গাছ রোপন প্রক্রিয়ার প্রায় প্রতিটি অংশের সাথে জড়িত হতে পারে, যা
শুধুমাত্র গাছের বৃদ্ধির জন্যই সহায়ক নয়, শিশুদের জন্যও উপকারী। এমন একটি
সময়ে যখন অনেক শিশু বাইরে খুব কম সময় কাটায়, শারীরিকভাবে সক্রিয় নয় এবং
তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন, বৃক্ষ রোপণ তাদের শরীর ও মন উভয়ের জন্যই
গুরুত্বপূর্ণ। গাছের পরিচর্যায় সময় ব্যয় করা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক
কর্মক্ষমতা, মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা, একাগ্রতা এবং স্ব-শৃঙ্খলার পাশাপাশি
প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালবাসা বাড়ায়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লার্নিং উইফ ট্রিস কার্যক্রম রয়েছে। উদাহাণ স্বরূপ Tree
Trust’s Learning with Trees প্রোগ্রাম হল যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা শহরের
প্রাথমিক এবং মধ্য বিদ্যালয়ের জন্য ফাউন্ডেশন অনুদান এবং কর্পোরেট
স্পনসরশিপ দ্বারা অর্থায়ন করা একটি বিনামূল্যের প্রোগ্রাম। স্কুলগুলি এই
প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য সারা বছর আবেদন করতে পারে; স্কুল নির্বাচন
ভৌগলিক অবস্থান এবং স্পনসরশিপের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে। এই
প্রোগ্রামটিতে শিশুদের বৃক্ষ রোপন, পরিচর্চা ও বৃক্ষপাঠ শেখানো হয়।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলায় মোট ২৩৭ টি সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে ২০০০ এর অধিক গাছ লাগানো হয়েছে । এখানে কমবেশি ৩০০০০ শিশু
কচিকাচা অংশগ্রহণ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে আজ সকল
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ
কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি শিশুকে বিদ্যালয়ে আকৃষ্ট করতে চাই বিদ্যালয়ে
শোভাবর্ধন। আর এই শোভা বর্ধনে কাজিপুর উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে শোভাবর্ধক গাছ লাগানোর উদ্যোগ আগামী প্রজন্মকে উদ্ভিদপ্রেমী করবে
এটা নিশ্চিত। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১ টি করে কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু, পলাশ, নিম বৃক্ষ
রোপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরসাথে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ফুলের বাগান তৈরীর
জন্য ১ টি করে বকুল, বেলী, গন্ধরাজ গাছ বাগানে রোপন করা হয়েছে। লাল কৃষ্ণচূড়া
আর পলাশ, বেগুনী জারুল আর হলুদ সোনালু শোভায় শিশুরা বিদ্যালয়ে দৌড়ে এসে বেলী,
গন্ধরাজ আর বকুল ঘ্রাণে পাঠগ্রহণ করবে। পুলকিত মনে বিকশিত হবে আগামী
প্রজন্ম। সেইসাথে এই উদ্যোগটিকে সাসটেনেবল করতে গাছের স্বাস্থ্য তথ্য (হেলথ
কার্ড) দেয়া হয়েছে। হেলথ কার্ডে সংযোজন করা হয়েছে অনেকগুলো গাছ পরিচর্চার
ধাপ যেমন-আগের দিন পরিমানমত গর্ত করা ও গর্তে প্রয়োজনীয় গোবর সার দেওয়া,

১ দিন পর গাছ লাগানো, বেড়া দেওয়া (ফেন্সিং), খুটি দেওয়া, ১৫ দিন সকাল বিকাল পানি
প্রদান, ৩ মাস পর পর্যবেক্ষণ, ৬ মাস পর পর্যবেক্ষণ, ১ বছর পর পর্যবেক্ষণ এবং
৪ বছর পর পর্যবেক্ষণ। এই ধাপগুলো ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বৃক্ষের সাথে মানসিক ও
আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। সেইসাথে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে
কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু শোভা, নির্মল নিমছায়া আর বকুল, বেলী, গন্ধরাজ ঘ্রাণে
বেড়ে উঠবে আগামী প্রজন্ম।

লেখক: উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ এবং যুক্তরাজ্যের
ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্স হতে গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন এন্ড লজিস্টিকস ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর