সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
কারামুক্ত হলেন সা’দ পন্থী আলেম মুফতি জিয়া বিন কাশেম সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় হত্যার চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার কোনাবাড়ীতে বিভিন্ন দাবি নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, কর্মবিরতী সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় এরান্দহ পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু শ্রমিকের আত্মহত্যা কারখানা কর্তৃপক্ষের শোক দুই কর্মকর্তা অব্যাহতি ডা. শফিকুর রহমান যারা দেশকে ভালবাসে তারা কখনও দেশ ছেড়ে পালায় না! যশোরে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে কলেজ ছাত্র আটক ভাঙ্গুড়ায় ৯ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার উল্লাপাড়ায় ট্রাক ও মাইক্রোবাস সংর্ঘষে নিহত ২ জন আহত ১ চরবাসীর দুঃখ ঘোচাতে অনবদ্য ছুটে চলছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা

বেড়িবাঁধে স্বস্তি হাজারো মানুষের

রিপোর্টারের নাম : / ২১৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২১ মে, ২০২২

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে নির্মিত বেড়িবাঁধ। ছবি: আজকের পত্রিকা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন (৫২)। এ পর্যন্ত তিনবার তাঁর বসতবাড়ি বঙ্গোপসাগরে ভাঙনের মুখে পড়েছে। ঝড়ঝাপটা ও সাগরের জোয়ার-ভাটায় বছরের বেশির ভাগ সময় কেটেছে দুশ্চিন্তায়। বর্ষা এলেই সাগরের সঙ্গে যুদ্ধ লেগে থাকত।

কামাল উদ্দিনের মতো এভাবে এক দশক ধরে জোয়ার-ভাটায় দিন কেটেছে দেশের মূল ভূখণ্ডের শেষ ঠিকানা শাহপরীর দ্বীপবাসীর। এই দ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষের সেই দুশ্চিন্তা কেটেছে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধে।

ইতিমধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করে ভাঙন রোধে সিসি ব্লক বসানোর কাজ চলছে। এ মাসের মধ্যেই ব্লক বসানোর কাজ শেষ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে আগামী বর্ষা মৌসুমে দ্বীপের বাসিন্দারা সামুদ্রিক ঝড়ঝাপটা থেকে রক্ষা পাবেন এবং দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।

কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮৪ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক। এ সড়কের জিরো পয়েন্টেই পড়েছে নির্মাণাধীন সাবরাং ইকো টুরিজম পার্ক। এ পার্কের দক্ষিণ-পশ্চিমে যুক্ত হয়েছে শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধ। বাঁধটি তিন কিলোমিটার গিয়ে নাফ নদের মোহনায় মিশেছে সীমান্ত সড়কে।

এ দ্বীপের দুই পাশে বঙ্গোপসাগর, এক পাশে নাফ নদ। দ্বীপটি ভাঙতে ভাঙতে ইতিমধ্যে বড় একটি অংশ সাগরে বিলীন হয়ে গেছে।

২০১২ সালের জুলাই মাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া, ডাংঘরপাড়া ও উত্তরপাড়ার কয়েক শ বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জমিজমা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাগরে বিলীন হয়ে যায়। পশ্চিমপাড়া পুরোটাই এখন সাগরের ভেতরে এবং মাঝেরপাড়ার অর্ধেক সাগরে চলে গেছে।

১৯৯১ সাল থেকেই ভাঙনের মুখে রয়েছে ঘোলারচর, মিস্ত্রিপাড়া ও জালিয়াপাড়া। সাগরের ভাঙা-গড়ায় পড়ে ঘোলারচর ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী বলছেন, বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় ৩৫ হাজার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সাগরের নোনা পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার দুঃখ দূর হয়েছে।

সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হওয়ায় দ্বীপের মানুষের ভিটেবাড়ির পাশাপাশি কৃষি, লবণ, চিংড়ি ঘেরসহ নানা সম্পদ রক্ষা পেয়েছে। অবশ্য দ্বীপের দক্ষিণ পাশের ঘোলারচর পয়েন্টে আরও ৮০০ মিটার বেড়িবাঁধে সিসি ব্লক বসানো না গেলে সেখানে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিবছর এই দ্বীপে লবণ, চিংড়ি, মৎস্য চাষ, পানের বরজ, সবজিসহ বিভিন্ন খাতে ৩০০ কোটি টাকার পণ্য উৎপন্ন হয়।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে শাহপরীর দ্বীপ প্রতিরক্ষা বাঁধ প্রকল্পের আওতায় ১১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কাজ শুরু করা হয়। গত বছর এ বাঁধের মাটির কাজ শেষ করা হয়। এ বছর ভাঙন রোধে ৩০ কোটি টাকার সিসি ব্লক বসানোর বরাদ্দ দেয় সরকার। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসটিএ।

এসটিএ গ্রুপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার শাখারী ননী বলেন, ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধের ভাঙন রোধে সিসি ব্লক বসানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। বর্ষা শুরুর আগেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রকল্পের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, ‘তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কারণে শাহপরীর দ্বীপের কয়েক হাজার মানুষ সামুদ্রিক জোয়ার-ভাটায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছিল। একসময় দ্বীপটি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রতিরক্ষা বাঁধটি সংস্কার ও সিসি ব্লক বসানো সম্পন্ন হলে দ্বীপের যোগাযোগব্যবস্থা যেমন সুগম হবে, পাশাপাশি অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর