দুদক কর্মকর্তার দুর্নীতি ধরিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- দুদক চেয়ারম্যান

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, দুদকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আসে এবং প্রতিষ্ঠানটিরও বদনাম রয়েছে। এই বদনাম বা দুদকের কোনো কর্মকর্তার দুর্নীতি ধরিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার ( ২১ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ‘সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ’ এই শ্লোগানে আয়োজিত এক গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সাধারণত অভিযোগ গুলো কার বিরুদ্ধে? দুদকের বিরুদ্ধে। দুদকেরও বদনাম রয়েছে। আপনারা সেটি ধরে দিবেন, আমরা ব্যবস্থা নিব। শতভাগ লোক বলে দুর্নীতি চাই না, তাহলে দুর্নীতি কিভাবে হয়? দুই একজন লোকের কারণে দুর্নীতি হয়। দশমিক শূন্য শূন্য কয়েক ভাগ (অর্থাৎ খুবই নগণ্য সংখ্যক) লোক দুর্নীতি চান বা দুর্নীতি করেন।
দুদক চেয়ারম্যান ড. মোমেন বলেন, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অনেক কর্মকর্তা সৎ ভালো। তারা অনেক সময় কাজের সুযোগ পাননা। এটিও কাম্য নয়। ৫ আগষ্টের পরবর্তী ডঃ ইউনুসের সরকার দূর্নীতিমুক্ত সরকার। আগে তো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও ঘুষ দিতে হতো।সরকারের দুর্নীতির একটি বড় অংশ ঘটে কেনাকাটার ক্ষেত্রে। দূর্নীতি মুক্ত দেশ গড়তে সকলের সহযোগিতা চান তিনি।
দুদুক চেয়ারম্যান আরো বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধে কর্মকর্তাদের আরো আন্তরিক হতে হবে। সেবা গ্রহীতাদের চাহিদার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিটি প্রকল্পের কাজে ঠিকাদার বান্ধব নয়, বাংলাদেশ বান্ধব হতে হবে। কয়েকটা গণশুনানিতে গিয়ে আমার একটা বড় অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেটা হচ্ছে আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আসলে কোন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা না। আমরা চাইলে সে সমস্যাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করতে পারি। এসময় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুড়িগ্রামের আয়োজনে ও লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদকের কমিশনার(তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী।
দুদকের এ গনশুনানিতে জেলায় কর্মরত ৩৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০৬টি অভিযোগ জমা পড়ে। শুনানির সময় সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ও সেবা গ্রহীতার উপস্থিতিতে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা গ্রহীতারা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে যে সমস্ত হয়রানির শিকার হন তারা সেগুলো গণশুনানিতে সেবা দাতাদের মুখোমুখি হয়ে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। গণশুনানিতে উত্থাপিত সমস্ত অভিযোগের অনেক গুলোকেই আমলে নিয়ে সেবাদাতাদের দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেয়া হয়।