শিরোনামঃ
একই পরিবারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির দুই কার্ড ৮ বছরে চাল পাইনি এক ছটাক! রায়গঞ্জে কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপ পূনঃগঠন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত সোনার বাংলা এসএসসি ২০০০ ব্যাচের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে রোজাদার ও শিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ রায়গঞ্জে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে মৌসুমী বন্যায় আগাম সাড়াদান প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রীর আত্মহত্যা,মেয়ের পরিবারের অভিযোগ হত্যা ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩৩ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার লালমনিরহাটে বিএসএফ গুলিতে আহত বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু! ‘শূন্যের বৃত্ত’ থেকে বের হলো বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত স্বাধীনতা দিবসে ভারত রাশিয়া ও চীনের শুভেচ্ছা ঈদযাত্রায় এবার স্বস্তির আশা চীনের পর বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার আসিয়ান অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান দেখতে কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা টিকিট কালোবাজারি বন্ধে জিরো টলারেন্স: রেলমন্ত্রী প্রশিক্ষণে আসবেন ভুটানের ডাক্তার-নার্স অসাম্প্রদায়িক মানবিক ও স্মার্ট দেশ গড়ার প্রত্যয় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার চেতনায় উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ব: প্রধানমন্ত্রী

বুকভরা ভালবাসায় চ্যাম্পিয়নদের বরণ

কলমের বার্তা / ১১৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

দেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংবর্ধনা পেয়েছেন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী গর্বিত বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘হিমালয় জয়’ করে নেপাল থেকে প্রথমবারের মতো ট্রফি জয় করেন বাংলার বাঘিনীরা। চোখ ধাঁধানো সাফল্যের পর গোটা দেশ ভাসছে আনন্দের জোয়ারে। ট্রফি জয়ের পর থেকে বাংলার সোনার মেয়েদের বরণ করে নিতে তর সইছিল না দেশবাসীর। অবশেষে বুধবার দুপুরে বিজয়ী বীরদের বরণ করে নেয়া হয়েছে ফুলেল ভালবাসা আর রাজকীয় সংবর্ধনায়।
ইতিহাস গড়া সাবিনা-স্বপ্না-সানজিদারা নেপালের কাঠমান্ডু থেকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে। বিমানবন্দরে বিজয়ী কন্যাদের স্বাগত জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। এ সময় আরও ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মানিক ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ অন্য কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরুতেই কেক কাটা হয়। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী প্রথমেই কেক তুলে দেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের মুখে। শিরোপাজয়ী অধিনায়কই শুধু নন, তিনি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতা। এ সময় সফল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনকেও কেক খাইয়ে দেয়া হয়। এরপর ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী একে একে দলের প্রত্যেক খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেন।
সোনার মেয়েদের বরণ করে নিতে সকাল থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে হাজারো জনতা ভিড় জমান। ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ সেøাগানে মুখর করেন চারপাশ। অনেকের হাতেই জাতীয় পতাকা, নানা রকম ব্যানার, প্ল্যাকার্ড। বিকেএসপির একটি বড় দলও দেখা যায় মেয়েদেরকে বরণ করে নিতে। বাংলার অদম্য মেয়েদের বরণ করে নিতে সংবাদকর্মীদেরও ছিল উপচেপড়া ভিড়। নিকট অতীতে কোন ইভেন্ট কাভার করতে এত সংবাদকর্মী বিমানবন্দরে এসেছেন কিনা সন্দেহ। চ্যাম্পিয়ন মেয়েরা বিমানবন্দরে পৌঁছার পর অবস্থা রীতিমতো বেগতিক হয়ে পড়ে। সংবাদকর্মী-ইউটিউবাররা পারলে মেয়েদের ওপর ক্যামেরা নিয়ে পড়েন! এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয় যে, দাঁড়ানোর জায়গাটুকুও পাওয়া যাচ্ছিল না। চরম বিশৃঙ্খল অবস্থায় শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনের জায়গায় যখন সবাই ভিড় জমিয়েছেন, তখন ভিআইপি লাউঞ্জে বসে ছিলেন চ্যাম্পিয়ন মেয়েরা। তবে শেষ মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য করা হয় সংবাদ সম্মেলন। এটা করা হয় ছাদখোলা বাসে ওঠার ঠিক আগ মুহূর্তে। এরপর বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে মেয়েরা ছাদখোলা বাসে ওঠেন। তারপর শুরু হয় মতিঝিলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) উদ্দেশে যাত্রা। চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সেরা তারকা সানজিদা আক্তারের ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর মাত্র একদিনের ব্যবধানে বিআরটিসির দোতলা বাসকে ‘ছাদখোলা’ বাসে রূপান্তরিত করা হয়। বাসের ব্যানারে লেখা ‘চ্যাম্পিয়নস’। এই বাসে আরোহণ করেন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নরা। তবে বিমানবন্দর ও বাসে বেশ অব্যবস্থাপনার সম্মুখীন হতে হয় সাবিনা খাতুনের দলকে। প্রথমত বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় মানুষের ভিড় ও ধাক্কাধাক্কিতে হয় চরম ভোগান্তি। এরপর একই অবস্থায় পড়তে হয় ছাদখোলা বাসের চ্যাম্পিয়ন প্যারেডেও।

নারী ফুটবলারদের বহনকারী এই ছাদখোলা বাসের জন্য দেয়া হয়নি কোন বিশেষ প্রটোকল। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পথে বারবার জ্যামের কারণে থেমে যায় বাস। ঢাকা শহরের চিরাচরিত যানজট ঠেলে গন্তব্যে গেলেও কারও মুখে ছিল না ক্লান্তির ছাপ। সবার মুখেই হাসির দেখা মিলছে, কেউ কেউ নিজের মোবাইল ফোনে লাইভ করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাদের অভিবাদন জানাতে রাস্তার দুই ধারেই ছবি, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী। যে যেভাবে পারেন হাত নাড়িয়ে, গলা ফাটিয়ে অভিবাদন জানিয়েছেন গর্বিত মেয়েদের। আর ট্রফি উঁচিয়ে, জাতীয় পতাকা উড়িয়ে অভিনন্দনের জবাব দিয়েছেন সাবিনা-সানজিদারা। তবে ছাদখোলা বাসে চরম অপ্রীতিকর অবস্থার মুখোমুখি হন বাংলার বাঘিনী ঋতুপর্ণা চাকমা। বাস চলাকালীন ফ্লাইওভারের ধাক্কায় মাথা ফেটে যায় তার। এরপর তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে ঋতুপর্ণাকে।
হাজার হাজার জনতার ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বিমানবন্দর থেকে কাকলি হয়ে মহাখালী ফ্লাইওভার, জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিজয় সরণি, তেজগাঁও, ফ্লাইওভার দিয়ে মগবাজার, মৌচাক, কাকরাইল, ফকিরাপুল, আরামবাগ ও মতিঝিল শাপলা চত্বর হয়ে বাফুফে ভবনে গিয়ে অবতরণ করেন চ্যাম্পিয়ন বীরেরা। সেখানে সাবিনা, সানজিদাদের বরণ করে নেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলের সভাপতি কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের বরণ করে নিয়ে বাফুফে বস বলেন, ‘মেয়েরা শিরোপা জিতেছে। যখনই আমাদের ভাল ফল হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের চাইতে হয় না, যেতে হয় না।

উনি নিজে পরিকল্পনা করে আমাদের নির্দেশনা দিয়ে দেন। অলরেডি উনি জানেন যে বাংলাদেশ এটা করেছে। আমি আশা করছি, ওখান থেকে ভাল সংবর্ধনা ও উপহার আসবে। আর এখন আমাদের টার্গেট এশিয়া পর্যায়ে ভাল করা।’ এর আগে বিমানবন্দরে প্রতিক্রিয়া জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে গর্বিত লাল-সবুজের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন শিরোপা দেশবাসীকে উৎসর্গ করেন।
তাদের এভাবে বরণ করে নেয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাবিনা বলেন, ‘আমাদের এত সুন্দরভাবে বরণ করে নেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা অনেক কৃতজ্ঞ ও গর্বিত। সকলকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশের মেয়েদের, বাংলাদেশের ফুটবল যে আপনারা এত ভালবাসেন, এসব দেখে আমরা অনেক অনেক গর্বিত। সবাইকে ধন্যবাদ, আমাদের জন্য দোয়া করবেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বলুন বা ১৮ কোটি কিংবা ২০ কোটি, এই ট্রফি বাংলাদেশের সব মানুষের।’
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসা কোচ ও এই সাফল্যের নেপথ্য কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটনও মুগ্ধ দেশে ফিরে এমন সংবর্ধনা পেয়ে। তিনি বলেন, ‘রাজসিক এই আয়োজনে আমাদের বরণ করে নেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের এই পথচলা অনেক দিনের। অনেক পেছন থেকে আমরা উঠে এসেছি। ২০১২ সাল থেকে পরিবর্তনটা শুরু হয়েছিল। সবার অবদানেই আজকের এই সাফল্য। এজন্য প্রধানমন্ত্রী, দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।’

72


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর