বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামে সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলেটের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে-পুলিশ বলছেন মিথ্যা অভিযোগ 

রিপোর্টারের নাম : / ৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে চিলমারীতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে  সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ও ছবি ডিলিট করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সুপারের বডিগার্ডের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ওই সাংবাদিকের পরিচয় না জানায় এমনটা ঘটেছে। 

জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর শহড়ের মোড় এলাকায় ঈদে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগে মাইকিং করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান।

এসময় স্থানীয় সাংবাদিক, জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম ছবি ও ভিডিও করলে পুলিশ সুপারের বডিগার্ড তার ফোনটি নিয়ে ভিডিও ছবি ডিলেট করে ফোন ফেরত দেন। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার আসার খবর শুনে সেখানে গিয়ে ভিডিও ও ছবি তোলার সময় পুলিশ সুপার আমার ফোন নিতে বলেন । সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়েও  আমার হাতে থাকা ফোনটি কেড়ে নিতে বলেন। ওনার সাথে থাকা এক পুলিশ সদস্য ফোনটি কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করেন।

এঘটনায় সাংবাদিক সাইয়েদ আহমেদ বাবু, বলেন আমার জানামতে  কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার  এধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে তা মনে হয় না। কারন তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা , তাকে সবার সাথে ভালো আচরন করা উচিৎ।

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ১০টার পরে এসপি স্যার এসেছিলেন। কিন্তু ফোন কেড়ে নেবার ঘটনা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, “এটি ভুল তথ্য। রাতে অভিযানের সময় একটা ইয়ং ছেলে অন্ধকারে ভিডিও করতে ছিল। তাকে বলেছি ভিডিও করোনা। যাস্ট এটুকু। সেতো পরিচয় দেয়নি সে সাংবাদিক। তার আইডি কার্ডও ছিলনা। আমরা ভেবেছি ফেসবুকে ছাড়তে ভিডিও করেছে। এজন্য ডিলেট করে দেয়া হয়। মিডিয়া নিয়ে আমরা এটা বলতে পারিনা।”

পুলিশের বিবৃতিঃ

এ ঘটনায় শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুড়িগ্রাম পুলিশ মিডিয়া সেলের মিডিয়া অফিসার ও ওসি ডিবি 

মোঃ বজলার রহমানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি সাংবাদিকদের পাঠিয়েছে জেলা পুলিশ। তাতে দাবী করা হয়, কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের মোবাইল থেকে ভিডিও ডিলেট করার সংবাদ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভিন্নভাবে প্রকাশ হয়েছে।

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে তিস্তা ব্রীজের উপরে নবনির্মিত হরিপুর তিস্তা ব্রীজের পার্শ্বে মা মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগে চিলমারী ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ এলাকার লোকজনের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে ১০ এপ্রিল রাতে জেলা পুলিশের একটি টিম অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় অজ্ঞাত এক উৎসুক তরুন গোপন অভিযানের ভিডিওধারন শুরু করে। ওই তরুন নাম পরিচয় না দিয়েই ভিডিও ধারন করলে অভিযানের তথ্য ফেসবুকে ফাঁসের আশংকা করে তার মোবাইল হতে ভিডিও ডিলিট করার পরামর্শ দেয়া হয়। তরুনের সাংবাদিক পরিচয় পুলিশের জানা ছিলনা। পুলিশ ও মিডিয়া পরস্পর বন্ধু। মিডিয়াকে আঘাত করে কোন শব্দ উচ্চারণ করা হয়নি। একটা নির্জলা মিথ্যে ছড়ানো হচ্ছে। তার পরিচয় জানতে পেরে আগামীকাল সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় সভায় তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভুলভাবে প্রকাশ করায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর