বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে হাট বসানোর চেষ্টা বিএনপি নেতার, ইউএনও বরাবর অভিযোগ!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট : বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে হাট বসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া হাট ইজারাদার আসাদুল ইসলাম হিরু নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক সমাজ ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা জানান, জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া এস.সি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার বৃহৎ আকারের পাশাপাশি প্রতিদিন বাজার বসতো। তবে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সচেতন মহল, অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের দাবির পেক্ষিতে গতবছর সড়িয়ে নেওয়া হয় হাট। পরে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে পায় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সম্প্রতি এক প্রভাবশালী শিয়ালখোওয়া হাটটি ইজারা নেওয়ার পর আবারো হাট বসানোর পায়তারা করছে।
অভিভাবক সমাজের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয় শিয়ালখোওয়া এসএসসি স্কুল এন্ড কলেজ ও শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, তিনটি কিন্ডারগার্টেনের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র খেলাধুলার জায়গায় হাট বসানোর পায়তারা চলছে। ওই হাটে তামাক, গরু, ছাগল, হাস, মুরগী, সাইকেল, মাছসহ নানা সরঞ্জামাদি ক্রয়-বিক্রয় হবে। হাটটির কার্যক্রম চালু হলে ব্যাপক লোকসমাগম, শব্দ দূষণ, গরু জবাইয়ের বর্জ ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট চালু করার চেষ্টার বিষয়ে শিয়ালখোওয়া হাট ইজারাদার আসাদুল ইসলাম হিরুর মন্তব্য পেতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করেও মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাশেম আলী বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসলে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব পড়বে। তবে হাট বসানোর ক্ষেত্রে প্রভাব কারা ফেলছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি। আর শিয়ালখোওয়া এস.সি স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র নাথ রায় অতিরিক্ত লোকসমাগম হলে প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের উপর জানালেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সীদ্ধান্তই চুড়ান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ওই দুই প্রতিষ্ঠানের মাঠে ইতিপূর্বে হাট বসতো। পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবির পেক্ষিতে হাট সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। আবারো হাট বসানের পায়তারা প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ইজারাদার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় এবং হাটটিও যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য বিকল্প স্থান খোজা হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবর রহমান বলেন, যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট ছিলো সেগুলো সড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শিয়ালখোওয়ার দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে অবগত রয়েছেন জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।