বেনাপোলে ঈদ বাজারে কসমেটিকস্ কেনার ব্যস্ততা

মনির হোসেন,বেনাপোল যশোর: এককালে ফেরিওয়ালা বাসাবাড়ির পাশ দিয়ে হাঁকডাক দিত। তাদের কাছে থাকতো আলতা, চুড়ি, ফিতা, স্নো, পাউডার, লিপস্টিক, নেইলপলিশ ধঢ়ঢ় শুরু করে সাজসজ্জার বাহারি নানান সরঞ্জাম। ধদধধধদ কিশোরী আর তরুনীদের আকৃষ্ট করতো।
তাই এলাকায় ফেরিওয়ালার আগমন ঘটলে কিশোরী আর তরুনীরা ছুটে গিয়ে ফেরিওয়ালাকে থামাতো।
রোজকার দিনের প্রয়োজনে অথবা উৎসবে চলতো ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কেনাকাটা। কালের আবর্তে এখন ফেরিওয়ালার আধুনিক ভার্সন অনলাইন শপিং। আর বাজারে গিয়ে কেনাকাটা আর মীনাবাজারের প্রচলন তো হাজার হাজার বছর ধরেই।
নারী ও মেয়েরা উৎসব আসলেই নিজেকে সাজাতে পোশাক ও জুতার পাশাপাশি সমান গুরুত্ব দেন কসমেটিকস্ আর অংলকারের প্রতি।
সুন্দর সাজ সবার দৃষ্টি কাড়ে। তাই উৎসবের সাজ হওয়া চাই জমকালো। সেই জমকালো সাজে সুন্দর পোশাক পরিচ্ছদ, জুতার পাশাপাশি মানানসই কসমেটিকস এর ব্যবহার বাড়তি মাত্রা যোগ করে। শেষ হতে চললো সিয়াম সাধনার মাস রমজান। ঈদের আর দেড় সপ্তাহ বাকি। তাই কেনাকাটার এ পর্যায়ে বেনাপোলে ঈদ বাজারে বিভিন্ন বয়সী নারী ও মেয়েরা ছুটছেন কসমেটিকস্, ইমিটিশনের অলংকার, হেয়ারব্যান্ড, হেয়ারক্লিপ ও মেহেদী কিনতে। বেনাপোল বাজারে চুড়িপট্টি রহমান চেম্বার , নিত্য হাট, লাল মিয়া, নুর শপিং কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন মার্কেটে শুরু হয়েছে দেশি বিদেশী নানা ধরনের কসমেটিকস্্ ও ইমিটিশনের অলংকারের বেচাকেনা।
কোথায় কেমন দাম চুড়িপট্টিতে মেহেদী বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০টাকায়। পাঞ্চক্লিপ ১০ থেকে ২০০টাকা। লিপস্টিক ১০০ থেকে ৮০০টাকা। নেলপলিস ৬০ থেকে ৩৫০টাকা। মেকআপ ফাউন্ডেশন ২০০ থেকে ৫৫০টাকা। আংটি ৫০ থেকে ১৫০টাকা। ব্রেসলেট ৮০ থেকে ৩০০টাকা। চুড়ি ১০০ থেকে ২০০টাকা। মেটালের চুড়ি ১৮০ থেকে ২৫০টাকা। পায়েল ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। জেস টাওয়ারে মেকআপ বক্স পাওয়া যাবে ৩৫০ থেকে এক হাজার ৫০০টাকায়। মেহেদী ৩০ থেকে ৫০টাকা। আইশ্যাডো ২০ থেকে ৯০০টাকা। কমপ্যাক্ট পাউডার ১৫০ থেকে ৮০০টাকা। লিপস্টিক ১০০ থেকে ৩৫০টাকা। একই দামে পাওয়া যাচ্ছে নেইলপলিশ। পাঞ্চক্লিপ ৫০ থেকে ২৫০টাকা। ইমিটিশনের আংটি ২০ থেকে ২৫০টাকা। লাল মিয়া সুপার মার্কেট মেহেদী পাওয়া যাবে ৩০ থেকে ৫০টাকায়। মেকআপ বক্স পাওয়া যাবে ৭০০ থেকে দুই হাজার ৫০০টাকায়। লিপস্টিক ১৫০ থেকে ৫৫০টাকা। নেইলপলিশ ৫০ থেকে ১৫০টাকা। ইমিটিশনের আংটি ৭০ থেকে ৯০০টাকা। হেয়ারব্যান্ড ৫০ থেকে ২৫০টাকা। কানের দুল ১০০ থেকে ৭০০টাকা। চুড়ি সেট জোড়া ১৫০ থেকে এক হাজার ৫০০টাকা। নেকলেস সেট ৪০০ থেকে তিন হাজার টাকা।
যা বলছেন ক্রেতা
চুড়িপট্টিতে আসা সিনথিয়া মনির বলেন, মেহেদী কিনবো, সাথে ইমিটিশন জুয়েলারি কেনার ইচ্ছা। সারা বছর তেমন কেনা হয় না, তাই ঈদের এ সময়টাতে বেশি করে কিনে রাখি। রহমান চেম্বার আসা সুমনা আফরোজ বলেন, কিছু ইমিটিশন জুয়েলারি কিনতে এসেছি। কারন সোনার গয়না কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠান ছাড়া পরা হয় না। সারা বছর ইমিটিশন জুয়েলারিতেই চলে। নিত্য হাটে আসা নাজনীন নাহার বলেন, ছোটবেলায় বাড়িতে আসা ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে চুড়ি, ফিতা, কসমেটিকস্ কিনতাম। সেই দিনগুলো খুব মনে পড়ে। ভীড়ভাট্টার কারনে মার্কেটে কম আসি। তবে ঈদের সময়ে না আসলে আবার ভালোলাগে না।
যা বলছেন বিক্রেতা
চুড়িপট্টির বিপ্লব কসমেটিকস্ এর মালিক বিপ্লবুর রহমান বলেন, বিক্রি এখনো সেভাবে শুরু হয়নি। মেহেদী যা একটু বিক্রি হচ্ছে। ২২ রোজার পর থেকে বাড়ার আশা করছি। সাহিন স্টোরের বিক্রয়কর্মী রাকিব হাসান অপু বলেন, মেহেদী বিক্রি হচ্ছে তবে অন্যান্য কসমেটিকস্ এর তেমন বিক্রি নেই।
লাল সুপার মার্কেটের চন্দ্রিমা কসমেটিকস্ এর সত্ত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, বেচাকেনা শুরু হলেও এখনো তেমন জমে ওঠেনি।নিত্য হাটের সোহেল স্টোর এর সত্ত্বাধিকারী সোহেল রানা ও একই কথা বলেন। সুমাইয়া স্টোরের এর বিক্রয়কর্মী ইমরান হোসেন বলেন, কসমেটিকস্ এর বিক্রি সাধারণত ২২ বা ২৫ রোজার পর থেকে বেশি হয়। এবারে বিক্রি তেমন জমেনি। সামনের সময়ে বিক্রি হয়তো বাড়বে।