শিরোনামঃ
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ আহত-৪ গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ আহত-৪ অবশেষে কারা মুক্ত হলেন মাওলানা মামুনুল হক সেনা সদস্যদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন তাপদাহ উপেক্ষা করে ফসল কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা এপ্রিলে রেমিট্যান্স এলো ১৯০ কোটি ৮০ লাখ ডলার ফিলিপাইনে যাচ্ছে বাংলাদেশের হাইব্রিড ধানবীজ বেতাগীতে তীব্র গরমে তৃষ্ণার্তদের মাঝে ঠান্ডা পানি ও শরবত বিতরণ  হজ ব্যবস্থাপনায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে : ধর্মমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন: খাদ্যমন্ত্রী ঢাকাকে পরিবেশ বান্ধব সুন্দর শহরে রূপান্তরিত করা হবে : রাজউক চেয়ারম্যান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিকজোট বাংলাদেশ এর র‍্যালী ও আলোচনাসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে আ. লীগকে আমন্ত্রণ বিজেপির ধান উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন বসছে আজ আইপিডিআই ফাউন্ডেশন হৃদরোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে : স্পিকার যতবার সরকারে এসেছি শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি: প্রধানমন্ত্রী বেসিস নিয়ে আব্দুল আজিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কাজিপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি বরদাস্ত করবে না প্রশাসন

সামাজিক ন্যায়বিচারই টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি

কলমের বার্তা / ৫৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারে বিনিয়োগ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে। বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারকে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বুধবার প্যালেস ডি নেশনসে ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট-২০২৩’ এর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসহ সব আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রে সামাজিক ন্যায়বিচারকে স্থান দেওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা তার প্রথম পরামর্শে বলেন, এই জোটটিকে একটি মান-নির্ধারক বা দর কষাকষির ফোরামের পরিবর্তে একটি পরামর্শমূলক বা অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফরম হিসাবে গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয় হবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ন্যায়বিচারকে এক আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক অন্য মহলের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহারের বিষয়ে এই জোটকে সতর্ক থাকতে হবে।

তৃতীয়ত, এই জোটকে একটি নিয়মতান্ত্রিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার আওতায় সামাজিক ন্যায়বিচারকে একটি সংরক্ষণবাদী হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার না করে, বরং এর ব্যাপক প্রসারে ভূমিকা রাখার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।

চতুর্থত, শোভনকর্ম এবং উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার জন্য এ জোটের বিষয়ে আইএলও’র নিজস্ব অংশীজনদের থেকে ব্যাপক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে। পরিশেষে, আমাদের তরুণ সমাজকে সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ জোটকে মনোযোগী হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান শতাব্দীর বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বের জন্য আমাদের একটি নতুন সামাজিক চুক্তি তৈরি করতে হবে। এই সামাজিক চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হবে- টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, আমি একটি সুস্থ ও নিরাপদ আগামী প্রজšে§র স্বার্থে শিশু শ্রমের অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ও কাজের পরিবেশের মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং রপ্তানিমুখী কারখানাগুলোতে সে অনুযায়ী প্রতিকার করা হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে অবস্থিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অর্জনকে এগিয়ে নিতে আমরা একটি ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পলিসি’ প্রণয়ন করেছি এবং আমি আশা করি আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পরিশোধের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব এই ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার রূপকল্প-২০৪১-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করেছে। সে লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৯.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার যুবক-যুবতীকে উন্নত প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের ৬ লাখ ৫০ হাজার আইটি ফ্রিল্যান্সারকে মূলধারার অর্থনীতির ধারায় আনতে নিবন্ধিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার সামগ্রিক অভিবাসন খরচ কমাতে এবং অভিবাসীকর্মীদের সহজে ঋণ প্রদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশ নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী মানবিক গতিশীলতা এবং সামগ্রিক কর্মপরিবেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ডের সমঝোতা স্মারক সই : বাংলাদেশে দক্ষতা প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। যার মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডে বিশেষ করে মেডিকেল ও আইটি সেক্টর থেকে দক্ষ কর্মী রপ্তানির সুযোগ বাড়াবে। বুধবার সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরেস্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকের পর প্যালাইস ডেস নেশনসের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কক্ষে এই চুক্তি সইয়ের আয়োজন করা হয়।

সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জুর্গ লাউবার এবং সুফিউর রহমান নিজ নিজ দেশের পক্ষে ‘জ্ঞান বিনিময় ও দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক সমঝোতা স্মারকে সই করেন। সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরেস্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, এই সমঝোতা সই দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান বিনিময়ের অংশীদারত্বের পথ প্রশস্ত করবে।

আরও সুইস বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর : বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করার জন্য সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দেশ নতুন বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করেছে। বুধবার প্যালেস দেস নেশনস’র দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কক্ষে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হচ্ছে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গারাও তাদের দেশে ফিরতে চায়। আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সহায়তা দেওয়ার জন্য তিনি সুইস কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।

হোটেলের সভা কক্ষে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গারা যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য মিয়ানমারে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সম্প্রতি কিছু রোহিঙ্গা নিজ দেশে গিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। জবাবে ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, তারা চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারে তাদের প্রবেশাধিকার আছে, কিন্তু তাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা মিয়ানমারের পরিবেশ উন্নত করার চেষ্টা করব। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে তিনি বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য ইউএনএইচসিআরের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। পরে প্রিন্স রহিম আগা খান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

78


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর