সিরাজগঞ্জে মহাসড়কে ডাকাতি, গ্রেফতার ৪

সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক নেতাদের মাইক্রোবাসে হামলা করে টাকা ও মোবাইলফোন লুটের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এলাকার মাহমুদপুর ৩ নম্বর গলির হামিদুল ইসলামের ছেলে মো. তুষার হোসেন (৩০), রায়পুর উত্তরপাড়া (১ নম্বর মিলগেট) এলাকার আব্দুল লতিফ খানের ছেলে তুষার আহম্মেদ অন্তর খান (২৯) ও কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী গ্রামের মানিক মণ্ডলের ছেলে আব্দুর রহিম মণ্ডল (৩৬)।
গ্রেফতার অপরজন কামারখন্দের কোনাবাড়ী গ্রামের সোলেমান মণ্ডলের ছেলে মো. রাশেদুল ইসলাম ওরফে কেতু ওরফে কেচু (৩৫)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি রামদা, একটি হাসুয়া, একটি ডেগার, একটি লোহার রড জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া লুট হওয়া তিনটি মোবাইলফোন ও ১৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান বুধবার সন্ধায় জানান, গত ০৯ মার্চ রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে কোনাবাড়ী এলাকায় ডাকাতির স্বীকার হয় জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক নেতাদের মাইক্রোবাসটি।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর ডাকাতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ফারুক হোসেনের নির্দেশে একটি টিম গঠন করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. জিয়াউর রহমানের তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কামারখন্দ সার্কেল ও গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইনের নেতৃত্বে গঠিত টিম তথ্যপ্রযুক্তি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ডাকাতদের শনাক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতার রাশেদুল ইসলাম ওরফে কেতুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৭টি ডাকাতি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা রয়েছে। এছাড়া একই অভিযোগে বিভিন্ন থানায় তুষার হোসেনের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। রাশেদুল ইসলাম কেতু বাদে বাকিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ০৯ মার্চ রাতে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সম্মেলনে অংশ নেওয়া শেষে মাইক্রোবাসযোগে রাজশাহী ফিরছিলেন শিক্ষক নেতারা। রাত ৯টার দিকে মাইক্রোবাসটি যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় এলে ডাকাতরা মাইক্রোবাসটির পেছনে ঢিল ছোড়ে। ঢিলের বিকট শব্দে চাকা পাংচার হয়েছে, চালক এমনটা ভেবে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশে দাঁড় করান। পরে মহাসড়কের সাইড থেকে সাত-আট জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাইক্রোবাসটিতে হামলা চালায়। সংঘবদ্ধ ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জামায়াত নেতাদের সাতটি মোবাইলফোন ও প্রায় ৭৭ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা ড. মো. ওবায়দুল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।