শিরোনামঃ
রাজশাহীতে বিএসটিআইয়ের উদ্যোগে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস পালন পাঁচবিবিতে শিশু ও বৃদ্ধর উপরে হামলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাজুর বাবার দাফন সমপন্ন আশা জাগাচ্ছে বায়ুবিদ্যুৎ ডিসেম্বরে ঘুরবে ট্রেনের চাকা মূল্যস্ফীতি হ্রাসে ব্যাংক থেকে ঋণ কমাতে চায় সরকার বদলে যাবে হাওরের কৃষি বাংলাদেশে নতুন জলবায়ু স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্প চালু যুক্তরাষ্ট্রের ‘তথ্য দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র নিয়োগ দেওয়া হয়েছে’ অস্বস্তি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মোড় এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা উঠে যাচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা দূর ৫০০ একর খাসজমি বরাদ্দ স্বাধীনতাবিরোধীদের পদচিহ্নও থাকবে না: রাষ্ট্রপতি আজ জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী দশতলা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু বাগবাটি রাজিবপুর অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলে হুইল চেয়ার বিতরণ সিরাজগঞ্জ পৌরকর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত  কাজিপুর খাদ্য গুদামে অভ্যন্তরীণ বোরো -ধান চাউল সংগ্রহ এর উদ্বোধন আদিতমারীতে ধান-চাল ক্রয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু নিবির হত্যা মামলায় গ্রেফতার আরেক শিশু

তিস্তার চরে আলু চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন

কলমের বার্তা / ১৪২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার ধু-ধু বালুচরে আলুর ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। বিস্তীর্ণ চরজুড়ে শুধু আলু আর আলু। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ক্ষেতে রোগ বালাই কম হওয়ায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরে কয়েকদফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে আলু চাষে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের চাষিরা।

সম্প্রতি সরেজমিনে তিস্তা নদীবেষ্টিত উপজেলার চর জুয়ান সতরা, চর খারিজা, গোড়াইপিয়ার চর, চর রামনিয়াসা সহ কয়েকটি চর ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী মানুষ আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। ২৫০-৩০০ টাকা মজুরিতে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি, ১৫০ টাকা মজুরিতে নারী ও বিভিন্ন বয়সী শিশু-কিশোররাও শ্রম বিক্রি করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছর এ উপজেলায় ৯৫২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ণয় করা হলেও ৮৪৫ হেক্টর অর্জিত হয়। এর মধ্যে কার্ডিনাল ৩২৫, ডায়মন্ড ৪৫, এস্টেরিক্স ১৬০, গ্রেনুলা ৯৫, লাল পাকড়ি ৮৫ ও বগুড়াই ১৩৫ হেক্টর। তবে গত বছর ৭৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয়েছিল ৮৮৫ হেক্টর।

উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের চাষি আব্দুল মতিন। প্রতিএকর ১০-১৫ হাজার টাকায় চুক্তি নিয়ে সাড়ে ১৮ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। গত বছর আলু চাষে প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হন। তবে এবারে ফলন ভালো হওয়ায় লাভের আশা করছেন তিনি। আব্দুল মতিন জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট। এখন কাঙ্ক্ষিত দাম না থাকায় হিমাগারে (কোল্ড স্টোরেজ) রাখা হচ্ছে। দাম ভালো হলে কয়েক লাখ টাকা আয় হবে তার।

দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুন গ্রামের চাষি আনারুল ইসলাম দুই একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। প্রতিশতক জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে তার এক হাজার টাকা। আনারুলের স্ত্রী শাহের বানু জানান, ‘গতবার আলু আবাদ করি হামরা অনেক লস খাইছি। এবার লাভের আশায় আলু চাষ করছি। ফলনও ভালো। দাম ভালো পেলে গতবারের লস উঠে আসবে। ‘

দড়ি কিশোর পুর গ্রামের আশরাফুল জানান, ৮ একর জমিতে আলু চাষাবাদ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। এর আগে আগাম জাতের আলু চাষ করে আকস্মিক বন্যায় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। তবে এ বছর লাভের আশা করছেন তিনি।

চর গোড়াইপিয়ারের চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, বীজ রোপণ থেকে শুরু করে আলু তোলা পর্যন্ত প্রতিকেজি আলুতে প্রায় ১০ টাকা খরচ হয়েছে। এখন ক্ষেত থেকে আলু তুলে কোল্ড স্টোরেজ পর্যন্ত যেতে প্রতি বস্তায় খরচ হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। গত মৌসুমে ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তার।

আলুর চাষাবাদকে ঘিরে চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে গেছে। বিভিন্ন বয়সী নারী ও শিশুরা আলু তোলার কাজ করে বাড়তি আয় করছেন। প্রায় ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলে তাদের এ কাজ। বয়স অনুযায়ী মজুরি নির্ধারণ করেন চাষিরা।

দৈনিক ২০০ টাকার মজুরিতে আলু তোলার কাজ করেন এসএসসি পরিক্ষার্থী শাকিল মিয়া। তার সাথে কাজ করেন বাবু মিয়া (১৩), শিমুল মিয়া (১১) হাফিজুর রহমান (১৩)। এরা সবাই বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। জানতে চাইলে তারা বলেন, অভাবের সংসার। লেখাপড়ার পাশাপাশি আলুর বীজ রোপণ ও আলু তোলার কাজ করি। এসব কাজে তেমন শক্তির প্রয়োজন হয় না, ভালো টাকাও আয় হয়। এতে করে আমাদের পড়ার খরচের পাশাপাশি পরিবারে সহযোগিতা করতে পারি।

এ সময় ঘোড়ার গাড়ির মালিক (গাড়িয়াল) সাগর মিয়া, আব্দুল কুদ্দুস, হাসান আলী জানান, প্রতিবস্তা ২০ টাকা দরে চর থেকে আলুর বস্তা নদীর ঘাটে পৌঁছে দিই। সারাদিনে ৭-৮ ট্রিপ (খ্যাপ) দিতে পারি। এতে অন্য ভাড়ার তুলনায় আয় ভালো হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার তুলনামূলকভাবে শীত কম হওয়ায় আলুর নাবি ধসা (নেট ব্লাইট) রোগ কম হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষকদের গ্রুপভিত্তিক পরামর্শ দিয়ে সুষম সার ও ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে। আশা করি এতে করে কৃষকরা লাভবান হবেন।

100


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর