রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় এরান্দহ পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু শ্রমিকের আত্মহত্যা কারখানা কর্তৃপক্ষের শোক দুই কর্মকর্তা অব্যাহতি ডা. শফিকুর রহমান যারা দেশকে ভালবাসে তারা কখনও দেশ ছেড়ে পালায় না! যশোরে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে কলেজ ছাত্র আটক ভাঙ্গুড়ায় ৯ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার উল্লাপাড়ায় ট্রাক ও মাইক্রোবাস সংর্ঘষে নিহত ২ জন আহত ১ চরবাসীর দুঃখ ঘোচাতে অনবদ্য ছুটে চলছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মসজিদ ভাংচুরের ঘটনায় আশুলিয়ায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন লালমনিরহাট জজ আদালতে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ কালিয়াকৈরে যুবককে আটকে রেখে নির্যাতন,২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ

শ্রমিকের আত্মহত্যা কারখানা কর্তৃপক্ষের শোক দুই কর্মকর্তা অব্যাহতি

রিপোর্টারের নাম : / ১৯ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মনট্রিমস কারখানায় শ্রমিকের আত্নহত্যার ঘটনায় শোক জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালেই কারখানার সামনে অব্যাহতির নোটিশ ও শোকাহত ব্যানার সাটিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কারখানা যাথারিতি উৎপাদন কার্যক্রম চালু হয়েছে।

এরআগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওই কারখানার ২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কারখানাতেই মো. ইদ্রিস আলী নামের এক শ্রমিক বিষাক্ত কেমিক্যাল পানে আত্মহত্যা করেন। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক অনুসন্ধানে জেনেছেন ওই শ্রমিক অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড নামে বিষাক্ত পদার্থ সেবন করেছেন, যা তাদের প্রতিষ্ঠানে ছিল না।

মারা যাওয়া মো. ইদ্রিস আলী (২৩) উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবার ভাড়া বাসায় থেকে মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার কাজ করতেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানায়, শ্রমিক ইদ্রিস আলী গত বৃহস্পতিবার রাতে তার ফেইসবুক আইডিতে কারখানার অনিয়মের অভিযোগ ও কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্লানিং) কামরুল ইসলাম ও উপ ব্যবস্থাপক (কার্টুন সেকশন) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন। তিনি ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেয়ার পর ক্যামিকেল জাতীয় কিছু খেয়ে আত্নহত্যা করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে রাতেই চাকুরি থেকে অব্যাহিত প্রদান করে। এছাড়া সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে একটি কর্তৃপক্ষ একটি নেটিশা সাটিয়ে দেন। তাতে লেখা আছে, ‘ আমাদের সহকর্মী মো. ইদ্রিস আলীর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’ এছাড়া আরেকটি অফিস আদেশ দিয়েছেন। তাতে লেখা আছে, ‘ সুষ্টু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্লানিং) কামরুল ইসলাম ও উপ ব্যবস্থাপক (কার্টুন সেকশন) হারুন অর রশিদকে চাকুরি হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। এদিকে শুক্রবার বন্ধ থাকার পর শনিবার সকাল থেকে যথারীতি কারখানা খোলে দেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা শতস্ফুর্তভাবে কাজ করছেন।

ওই কারখানা শ্রমিক লাবিব হোসেন বলেন, ইদ্রিসের মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। ইতোমধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তার পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি লিখিত নোটিশে জানান, জনাব ইদ্রিসের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনি গত ১৮ এপ্রিল মধ্যরাতের হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে আমাদের প্রতিনিধি দল তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয় কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে, সন্দেহ করা হচ্ছে জনাব ইদ্রিস ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’, একটি বিষাক্ত পদার্থ সেবন করেছেন। স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি অনুসরণ করে, স্থানীয় পুলিশ একটি পরীক্ষা (সুরাথাল) করেছে এবং প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে মৃত্যুর কারণ বিষ খাওয়ার ফলে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ‘অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড’ ব্যবহার করা হয় না। আমরা হাসপাতালের পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি। ইদ্রিসের পরিবারের সাথে প্রাথমিক কথোপকথনে, আমরা জানতে পেরেছি যে তিনি ব্যক্তিগত সমস্যায় ভুগছিলেন যা মানসিক যন্ত্রণার কারণ ছিল। আমরা তার পরিবারকে ইতোমধ্যে ৪ লাখ টাকা প্রদান করেছি। এছাড়াও তার পরিবারের যোগ্য সদস্য-বিশেষ করে তার স্ত্রী-ইচ্ছুক এবং সক্ষম হন, তাহলে উপযুক্ত চাকরি দেওয়া হবে।

মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) গোলাম সারওয়ার বলেন, ওই দুই কর্মকর্তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সকাল থেকে কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে এবং শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তার পরিবারের তিনদিনের যাবতীয় খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্ত্রী ও পরিবারের সদস্য কেউ কারখানায় কাজ করতে চাইলে সেটিও ব্যবস্থা করেমদেওয়া হবে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, নিরাপত্তার সার্থে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে কোন অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়নি, শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর