আজ রক্তাক্ত সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস। ১৯২২ সালের আজকের এই দিনে তদানিন্ত্রন বৃটিশ সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে সলঙ্গার হাটে সাড়ে ৪ হাজার বিলেতি পন্য বর্জন আন্দোলনের কর্মি সহ সাধারণ হাটুরে জনতা হতাহত হয়। বৃটিশ শাসনামলে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনে জনতা উদ্বেলিত হয়ে বিলেতি পণ্য বর্জন করে স্বদেশী পন্য ব্যবহারের সংগ্রাম শুরু করেছিল। এমনি একটি আন্দোলনের ঢেউ এসে আছড়ে পরে সলঙ্গায়।
সে সময় তৎকালীন পাবনা জেলার এবং বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গায় একটি ব্যবসায়িক জনপদ হিসেবে সপ্তাহে ২দিন হাট বসত। ১৯২২ সালের ২৭ শে জানুয়ারি শুক্রবার ছিল বড় হাট বার। মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা হাটে নামে বিলেতি পন্য কেনা বেচা বন্ধ করতে। আর এ স্বদেশী আন্দোলনের কর্মীদের রুখতে ছুটে আসে পাবনা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আর,এন,দাস জেলা পুলিশ সুপার ও সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রাসাশক এস,কে সিনহা সহ ৪০ জন সশস্ত্র লাল পাগড়ীওয়ালা পুলিশ। সলঙ্গার গো হাটায় ছিল বিপ্লবী স্বদেশী কর্মীদের অফিস। পুলিশ কংগ্রেস অফিস ঘেরাও পূর্বক গ্রেফতার করে মাওলানা আব্দুর রশিদকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্ত করতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বিদ্রোহে ফেটে পরে সলঙ্গার সংগ্রামী জনতা। জনতার ঢল ও আক্রোশ দেখে ম্যাজিষ্ট্রেট জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলি চালাতে নির্দেশ দেয়। শুরু হয়ে যায় বুলেট বৃষ্টি। ৪০ টি রাইফেলের মধ্যে মাত্র ১টি রাইফেল থেকে কোন গুলি বের হয়নি।
এ রাইফেলটি ছিল একজন ব্রাহ্মণ পুলিশের। ঘটনাটি গরু হাটায় হওয়ায় গো হত্যা মহাপাপ জেনে ওই ব্রাহ্মন পুলিশ কোন গুলি ছোড়েনি। হত্যা কান্ডে হতাহতের সরকারী সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার দেখানো হলেও বেসরকারী মতে ১০ হাজারেরও অধিক বলে জানা যায়।
দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন উপলক্ষে মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ পাঠাগার, সলঙ্গা সমাজ কল্যান সমিতি,নূরুননাহার তর্কবাগীশ ডিগ্রী কলেজ, তর্কবাগীশ মহিলা মাদ্রাসা, তর্কবাগীশ উচ্চ বিদ্যালয়, বিদ্রোহী সলঙ্গা ও সলঙ্গা ফোরাম পৃথক পৃথক ভাবে প্রভাতফেরী মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, ক্রিড়া প্রতিযোগিতা, র্যালী, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরন সহ নানা কর্মসুচী গ্রহন করেছে।