শিরোনামঃ
একই পরিবারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির দুই কার্ড ৮ বছরে চাল পাইনি এক ছটাক! রায়গঞ্জে কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপ পূনঃগঠন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত সোনার বাংলা এসএসসি ২০০০ ব্যাচের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে রোজাদার ও শিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ রায়গঞ্জে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে মৌসুমী বন্যায় আগাম সাড়াদান প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে স্ত্রীর আত্মহত্যা,মেয়ের পরিবারের অভিযোগ হত্যা ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩৩ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার লালমনিরহাটে বিএসএফ গুলিতে আহত বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু! ‘শূন্যের বৃত্ত’ থেকে বের হলো বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত স্বাধীনতা দিবসে ভারত রাশিয়া ও চীনের শুভেচ্ছা ঈদযাত্রায় এবার স্বস্তির আশা চীনের পর বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার আসিয়ান অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান দেখতে কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা টিকিট কালোবাজারি বন্ধে জিরো টলারেন্স: রেলমন্ত্রী প্রশিক্ষণে আসবেন ভুটানের ডাক্তার-নার্স অসাম্প্রদায়িক মানবিক ও স্মার্ট দেশ গড়ার প্রত্যয় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার চেতনায় উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ব: প্রধানমন্ত্রী

অবৈধ হাসপাতালের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে স্বাস্থ্য বিভাগ

কলমের বার্তা / ১৩৩ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২

অবৈধ হাসপাতালের মালিকানা কিংবা সেখানে কর্মরত থাকলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এসব অবৈধ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেট চেম্বার করে রোগী দেখলেও একই শাস্তির খড়গ নেমে আসবে। অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধে টানা প্রায় তিন সপ্তাহ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েও আশানুরূপ সফলতা না আসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আগামী দিনের অভিযানে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘আমাদের অভিযান এখন কিছুটা ধীরগতিতে চললেও তা পুরোপুরি থামেনি। অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকের মালিকদের আমরা দুই থেকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছি। এর মধ্যে যদি তারা অনুমোদন না নেয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশে অনুমোদন ছাড়া কোনো স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাতে পারবে না। সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে অনুমোদন নিতে হবে।’ ওপর মহলের চাপে আপাতত অভিযান বন্ধ আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে তাতে সবাই খুব খুশি। ওপর মহল থেকে আমাদের আরও শক্তি দেওয়া হয়েছে।

কোনোভাবেই অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকতে পারবে না। রাজনৈতিক কোনো চাপও আমাদের ওপর নেই। স্থানীয় কেউ যদি চাপ প্রয়োগ করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চিকিৎসক ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জড়িত আছেন এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি চাকরিরত অবস্থায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও নজরদারির আওতায় নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতায় যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে। আর অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে একজন রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসক যদি রোগী দেখেন তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা বা রোগী দেখা মানে সেই চিকিৎসকও অবৈধ বলে আমাদের কাছে গণ্য হবে। তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’ গত ২৫ মে আকস্মিক ঘোষণা দিয়ে অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এতে প্রায় দেড় হাজারের বেশি অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথম ১০ দিন সাঁড়াশি অভিযান চললেও পরবর্তীতে এ অভিযানের গতি অনেকটা কমে আসে। অভিযোগ আছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে এই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে অভিযান ঠিকমতো চালানো যাচ্ছে না বলে খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনেকে স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ রয়েছে, এসব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তা জড়িত। এছাড়া রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকদের অনেকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আরেকটি সূত্র বলছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্ধ করে দেওয়া অনেক হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নতুন নামে আবেদন করছে। এগুলো সবই চলে অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে গোপন আঁতাত করে।

২৫ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর সারাদেশে শুরু হয় অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান। এই অভিযানে দেশে বন্ধ করা হয় ১৬৪১টি ছোট বড় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে বর্তমানে দেশের কোথাও কোনো ধরনের অভিযান চলছে না। কারণ হিসেবে সূত্রটি জানায়, দেশে বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল প্রদান কার্যক্রম চলছে। তাই জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেখানে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যেসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তারা নতুন করে আবেদন করছেন। এসব আবেদন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা যাচাই বাছাই করছেন। যদি কাগজ ঠিক থাকে তাহলে বন্ধ করে দেওয়া অবৈধ প্রতিষ্ঠানকে বৈধ বলে গণ্য করা হবে এবং কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। সূত্রটি আরও জানায়, পুরো অধিদপ্তরজুড়ে এখন চলছে বন্ধ করে দেওয়া অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কাগজ যাচাই বাছাই। এমনকি কর্মকর্তারাও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইন্সপেকশন করছেন। নতুন করে আর কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযান চলবে না। তবে যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যাবেন তারা সন্তুষ্ট না হলে সেগুলো বন্ধ করে রেখে আসবেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, এই অভিযানের কোনো মানে হয় না।

দেশে এত অবৈধ হাসপাতাল গেল দুই বছরে তৈরি হয়ে যায়নি। ধীরে ধীরে এগুলো হয়েছে। এক রাতের মধ্যে আকাশ থেকে এত মেশিনারিজ নিয়ে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক ও হাসপাতাল তৈরি হতে পারে না। এসব অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান গজিয়ে ওঠার পেছনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও দোষ রয়েছে। তারা ইচ্ছে করে এতদিন এসবের দিকে কোনো ধরনের নজর দেয়নি। তিনি বলেন, করোনার দুই বছরে নিশ্চয়ই দেড় হাজারের বেশি অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার তৈরি হয়নি। নিজেদের ব্যর্থতা লুকাতে অধিদপ্তর এখন করোনার দোহাই দিয়ে যাচ্ছে। এগুলো আগে থেকেই দেখার দায়িত্ব তাদের।

নতুন কোনো বিষয় না এটা। ডা. সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, অভিযান শুরু করার পর জানা গেল অধিদপ্তরের কাছে কোনো তথ্যই নেই। কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুমোদন আছে আর কোনোটির কাছে নেই তারা জানেই না। এ ধরনের কার্যক্রম খুবই হাস্যকর। এখন যেটা হয়েছে তাদের আর কোনো অভিযান নেই। এখন তারা লেগে গেছে অনুমোদন দেওয়ার কার্যক্রমে। তাহলে বন্ধ করা হয়েছিল কেন প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কিছু দিন সময় নিয়ে সারাদেশে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ঘুরে ঘুরে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করত। সেটা দেখে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সময় দিয়ে দিলেই হতো। তা না করে অভিযানে নামা হলো, যা এখন বন্ধ।

এটা শুধু একটা লোক দেখানো কার্যক্রম ছিল আর কিছুই না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের কর্মকর্তা ডা. কাজী মো. সালেহীন তৌহিদ বলেন, ‘অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান সারা বছর চলমান থাকে। কিন্তু আমরা নির্ধারিত একটি সময় বেঁধে দিয়ে এরপর তিন-চার দিন একটানা অভিযান চালিয়েছি। এটা আমাদের টার্গেট ছিল। আমাদের টার্গেট অনেকটাই পূরণ হয়েছে। তারপরও যদি আমরা কোনো অবৈধ সেবা প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পাই সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমাদের কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। কিন্তু সেটা বন্ধ হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের কাছে অনেক প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। সেগুলো যাচাই বাছাই চলছে। আবেদন করলেই কাউকে আমরা নিবন্ধন দিয়ে দিব না। সঠিকভাবে ইন্সপেকশন হবে তারপর অনুমোদন। একটি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা হাসপাতাল চালাতে যে ধরনের স্থাপনা-ইকুইপমেন্ট ও লোকবল থাকতে হয় সেটা না থাকলে অনুমোদন দেওয়া হবে না।’

82


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর