কোনাবাড়ীতে হোটেল হ্যাভেন ফ্রেসে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা
ক্রাইম রিপোর্টারঃ
(১ম পর্ব)
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীতে পুলিশের নাকের ডগায় আবাসিক হোটেলে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। মহানগরীর কোনাবাড়ী বাস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত হোটেল হ্যাভেন ফ্রেস (আবাসিক) নামে একটি হোটেল।
সাবেক গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এর আমলে এই আবাসিক হোটেল গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আবারও মাথাচারা দিয়ে উঠে হোটেল ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কোনাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে মোহাম্মদ আলী প্লাজার তৃতীয় তলায় হোটেল হ্যাভেন ফ্রেস (আবাসিক) এর লম্বা লাইটিং সাইবোর্ড। হোটেল হ্যাভেন ফ্রেস (আবাসিক) এর মালিক রাসেল দেখতে একদম আলাভোলা। যেন ভাজা মাছ উল্টিয়ে খেতে জানেননা তিনি। তার নেতৃত্বে চলে এই হোটেল গুলো। গোপন সূত্রে জানাযায় উত্তরাতেও রয়েছে তার আরও দুইটি হোটেল। মূলত সে জাত ব্যবসায়ী। হোটেল ব্যবসা করেই রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে আবাসিক হোটেল গুলোতে চলছে অবৈধ দেহ ব্যবসা ও মাদক বানিজ্য। সারা দেশে প্রশাসন যখন বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরতদের দমাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঠিক তখনই নিরবে চালিয়ে যাচ্ছেন রাসেল মিয়ার জমজমাট পতিতা ব্যাবসা।
মাঝে মধ্যে থানা পুলিশ লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আসলে মনে হয় তাদের ঈদের দিন। কারণ কোনাবাড়ী কাশিমপুর শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়ায় সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে শুক্রবার। হোটেলের সামনে বসে থাকা দালাল বা হোটেল স্টাফরা দাড়িয়ে থেকে খদ্দের ডেকে ভেতরে নিয়ে যায়।
আবার ভ্রাম্যমান দালালরা খদ্দের ধরে সারাসরি হোটেল নিয়ে আসে। আর হোটেল মালিক পক্ষ আশে পাশে থেকে পাহারা দিচ্ছে। তাদের কাছে আইনি কোন ভয় নেই ।
গত কয়েকদিন আগে হাঠৎ একটি যুবক আসে। প্রথমে পাশে দাড়ায়। তার মিনিট খানেক পড়ে বলেন ভাই কাউকে খুজতে আসছেন নাকি। আসল রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রতিবেদক বললেন হ্যা এখানে হোটেল আছে না? যুবকটি বলেন হ্যা ভাই আছে। তবে আগের চেয়ে এখন উন্নত হয়েছে। এখন সব কচি মাল। রেট একটু বেশি অনেক টাকার মিনিময় চালু করিছি ব্যবসা। চেহারাও পরির মত। বিভিন্ন বয়সের আছে। আসেন ভাই ভিতরে ঢুকে দেখলেই প্রান জুড়ে যাবে আপনার। গোপন সূত্রে জানা গেছে, এভাবেই কোনাবাড়ীতে হোটেলে প্রতিদিনই চলে আবাসিক হোটেলের নামে রমরমা দেহ ব্যবসা। রাসেল নিজে সব লিড দেয়,সাথে তার পরিবার।
এই সব দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহ বধূরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর ছোট বড় মিলে কয়েকটি আবাসিক হোটেলে এই ধরনের অনৈতিক কাজ চলছে। তবে এই হোটেলের দৌরাত্ম্য অনেক বেশি। এই আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন যৌন কর্মী সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত এবং রাতের বেলায় আবারও অন্য গ্রুপ এসে পরের দিন সকাল পর্যন্ত দেহব্যবসা করে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী কুদ্দুস বলেন,কোনাবাড়ীটা নষ্ট করে ফেলেছে রাসেল ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা। পরিবার নিয়ে হাটাচলা যায়না। কিযে একটা অবস্থা। প্রশাসন যদি আবাসিক হোটেল বন্ধ না করে তাহলে এলাকাবাসী মিলে এই গুলো প্রতিহত করা হবে। এবিষয়ে রাসেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ থাকার কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কয়েকজন দালাল বলেন সব কিছু ম্যানেজ করেই চালানো হচ্ছে।
কোনাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, আমরা প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমার থানা এলাকায় কোন অসামাজিক কার্যকলাপ চলবেনা।